২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

কলেজে গণধর্ষণ: এবার ধর্ষক রাজন ও আইনুল গ্রেপ্তার

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:২২ অপরাহ্ণ, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: সিলেটে এমসি কলেজ হোস্টেলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত রাজন ও আইনুল নামে আরও দুজনকে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এর আগে এজাহার নামীয় আরও দুই আসামি রনি ও রবিউল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার সকালে রাজন ও আইনুলকে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ নিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামিসহ মোট ৬জনকে গ্রেপ্তার করলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজাহারভুক্ত ২ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।

ঘটনায় প্রকাশ, সিলেটে তরুণীকে তুলে নিয়ে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় অন্যতম আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই চারজনকে সুনামগঞ্জের ছাতক এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ ও নবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘটনার পর দ্বিতীয় দিন রোববারও প্রতিবাদে উত্তাল ছিল সিলেট। বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী গতকাল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমান ভারতে পালানোর জন্য সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়ারাইয়ে সুরমা নদীর খেয়াঘাটে আসবেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে ছাতক সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে ছাতক থানার পুলিশের একটি দল ভোরে সেখানে অবস্থান নেয়। সকাল ৭টার দিকে ধর্ষক সাইফুর সেখানে এলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে সিলেট নগরের শাহপরান থানায় হস্তান্তর করা হয়। গ্রেপ্তার সাইফুর সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দেরপাড়া গ্রামের তাহির মিয়ার ছেলে।

ছাতক সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ধরা না পড়তে সাইফুর দাড়ি কেটে ফেলে। সে মাস্ক পরে খেয়াঘাটে আসে। এ সময় তার পরনে টি-শার্ট ও প্যান্ট ছিল। ভোরে সে সীমান্ত এলাকায় এসে পৌঁছে। সম্ভবত সীমান্ত এলাকায় গিয়ে কারো সাথে যোগাযোগ করার কথা ছিল তার।’ সাইফুরকে পালিয়ে যেতে কেউ সাহায্য করছিল কি না সেটি নিশ্চিত হতে ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তাঁর আত্মীয়-স্বজন সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইউম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। প্রযুক্তির সহায়তায় সাইফুরের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।’

রোববার সকাল ১০টায় মামলার আরেক আসামি ও ছাত্রলীগকর্মী অর্জুন লস্করকে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার অর্জুন জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে। মাধবপুর পুলিশ জানিয়েছে, পুরো অভিযান গোয়েন্দা পুলিশ পরিচালনা করেছে।

পুলিশ জানায়- ঘটনার পর পালিয়ে সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জে নিজের বাড়িতে যান অর্জুন। পরদিন বিকেলে হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে তিনি গ্রামের বাড়ি জকিগঞ্জে এক ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখছিলেন। একাধিকবার তাঁদের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে রোববার সকালে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাধবপুরের বহরা ইউনিয়নের (মনতলা) সীমান্তবর্তী গ্রামে দুর্লভপুর এলাকায় পৌঁছে। এরপর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অর্জুনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ওই গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অর্জুনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন