২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

কোন পথে হাটছে বাউফল থানা পুলিশ, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:২৭ অপরাহ্ণ, ০৮ আগস্ট ২০২০

মোঃ জসীম উদ্দিন, বাউফল:: পটুয়াখালির বাউফলে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, খুন ও ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। আর এ আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য বাউফল থানার ওসিকে দায়ি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২ আগস্ট প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কেশবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি রুমন তালুকদার ও তার চাচাতো ভাই ইশাদ তালুকদার। এর দুই দিন আগে গত ৩১ জুলাই কেশবপুর বাজারে দুই পক্ষের হামলায় নিহত রুমন তালুকদারের মেঝ ভাই হাফেজ উদ্দিন পিন্টু ও মফিজ উদ্দিন মিন্টুসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছিলো। এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় নিহত যুবলীগ নেতা রুমনের ভাই ও কেশবপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সালেহ উদ্দিন পিকু বাউফল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেননি। তার অভিযোগ করেন, সেদিন ওসি মামলা নিলে হয়তো জোড়া খুন হতো না। যারা খুন করেছেন তারা এজাহারের আসামি ছিলেন।

এছাড়া গত ২৪ জুন বাউফল থানার সামনে তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় তাপস নামের এক যুবলীগ কর্মী ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান। বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) আল মামুনসহ এক ডজন এসআই-এএসআই এবং ২০ থেকে ২৫ জন পুলিশের চোখের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও তাদের ভূমিকা ছিলো নীরব। ওই সময় পুলিশ ব্যবস্থা নিলে খুনের ঘটনা এড়ানো যেত। পুলিশের এ রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তারা ওসির অপসারণ দাবি করেন। কিন্তু এখনো অদৃশ্য শক্তির কারণে ওসি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

এদিকে উপজেলার তেুঁতুলিয়া নদীতে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেলেও ডাকাতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-ঘরে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেছে। কেশবপুর, নাজিরপুর ও কাছিপাড়া গ্রামে গত ১৫ দিনে কমপক্ষে অর্ধশত চুরি সংঘটিত হয়েছে। ওই সব গ্রামের মানুষ এখন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এসব ঘটনা পুলিশকে অবহিত করা হলেও কোন ধরণের সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এছাড়া গত ৫ আগস্ট কাছিপাড়া বাজারে একরাতে ১০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৩টি ফ্লাটে চুরি সংঘটিত হয়েছে। কোরবানির আগের দিন পৌর শহরের জনৈক আবু বক্কর নামের এক ব্যক্তির গরু চুরি হয়েছে। থানায় অভিযোগ দিতে গেলে তার কাছে ইকবাল নামের এক সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ঘুষ দাবি করেন। এ কারণে তিনি মামলা না করে চলে আসেন।

কালাইয়া ইউপির দবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বরিশালটাইমসকে জানান, প্রতিপক্ষরা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করতে গেলে উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশিক তার কাছে ৩ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ওই সময় তিনি দেড় হাজার টাকা ওই এসআইকে দিলেও এখন পর্যন্ত তার মামলাটি হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার কোন মানুষ থানায় আইনি সহায়তা নিতে আসলে থানার বার্তা অপরেটর আবুল হোসেন তা প্রতিপক্ষকে গোপনে জানিয়ে দেন। বিনিময় হাতিয়ে নেন টাকা। এএসআই রফিকের বিরুদ্ধেও রয়েছে এ রকম অভিযোগ। অপরদিকে বাউফল থানার ওসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের অভিযোগ বিপদকালীন সময় সরকারি মোবাইল নম্বরে ফোন করলেও ওসি সহসা রিসিভ করেন না।

এ ব্যাপারে বাউফল সার্কেলের সিনিয়র পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষের যানমালের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পুলিশের। এসব বিষয়ে কোন পুলিশের গাফেলতি বরদাস্ত করা হবে না।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন