২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

গৌরনদীতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল সংস্কারে অনিময়

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:২০ অপরাহ্ণ, ২৫ আগস্ট ২০২০

বার্তা পরিবেশক, গৌরনদী:: বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ঘূর্নিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাধারণ (ক্ষুদ্র) সংস্কারের বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে নাম সর্বস্ব স্কুল মেরামত করা হয়েছে। এমনকি কয়েকটি স্কুলে টিনসেড ভবন ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় থাকলেও সেখানে কোন টিনসেড ভবন পাওয়া যায়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটের আওতায় ঘূর্নিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। সে অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক বিদ্যালয়ের সংস্কারের জন্য দেড় লক্ষ টাকা করে উপজেলার ২৩টি বিদ্যালয়ে মোট ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় থাকা উপজেলার বেজগাতী মৈস্তারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে দুইটি পাঁকা ভবন। ভবন দুইটি ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো কিনা এমন তথ্য দিতে পারেনি স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ সরকারি টাকা বরাদ্দের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে এ স্কুলটিকে আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রাখা রয়েছে। এমনকি এ বিদ্যালয়ে কোন টিনের ঘর না থাকা সত্বেও প্রতিবেদনে একটি টিনের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত উল্লেখ করা হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন কাজ করা হয়নি।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কল্পনা রানী বরিশালটাইমসকে জানান, বিদ্যালয়টি পূর্বে টিনসেড ছিলো। ২০১৭ সালে ভবন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ভবনের কিছু ক্ষতি হয়েছিলো।

তিনি আরও জানান, বরাদ্দকৃত টাকা এখনও উত্তোলণ করা হয়নি। কমিটি না থাকায় কাজও করা হয়নি। তবে একটি টিনসেড ঘর উত্তোলণ করা হবে বলেও তিনি যোগ করেন।

একইভাবে উপজেলার ইল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেড ভবন ক্ষতিগ্রস্তের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, কিন্তু সেখানেও পাওয়া যায়নি কোন টিনসেড ভবন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষকেরা জানান, মূলত উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সু-সম্পর্ক রয়েছে সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এমনকি অনেক স্কুলে একই সাথে দুইটি বরাদ্দও দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে চলতি বছরে নিয়োগ হওয়া নতুন শিক্ষকদের বেতন ভাতা করে দেয়ার নামে একাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা হারে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে ভুক্তভোগিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এসব বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সল জামিল বরিশালটাইমসকে জানান, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো কাজ করার পর সংশ্লিষ্ট সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তার প্রত্যয়ন করার পরপরই প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে বিল দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বিল করার নামে কারও কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি তার জানা নেই বলে উল্লেখ করেন।

বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক এস.এম ফারুক বরিশালটাইমসকে জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস পূর্বে একযোগে ২৪টি বিদ্যালয় বন্ধ করে বনভোজনে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন গৌরনদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সল জামিল।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন