২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

চাকরি হারিয়ে বিপাকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকরা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:২৬ অপরাহ্ণ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: সারাদেশের নিয়োগ স্থগিত হওয়ায় নতুন চাকরিতে যোগদান করতে না পেরে বেকার অবস্থায় অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে ৪৩ জেলার নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকরা।

রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘২০১৮ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকার’ ব্যানারে এক মানববন্ধনে এমন দাবি করেন শিক্ষকরা। এসময় দ্রুত চাকরিতে যোগদান নিশ্চিত করার দাবি জানান ৪৩ জেলার নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকরা।

মানববন্ধনে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেন, আমরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছি। আমাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ নিশ্চিত করে পদায়ন করতে হবে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এ যোগদান কার্যকর করা না হলে আরও কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এসময় বক্তারা বলেন, আমরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেলেও একটি মহল নিয়োগে নিশ্চিত বাধাগ্রস্ত করতে হাইকোর্টে রিট করেছে। তারা মেধায় নিয়োগে টিকতে পারিনি। তাদের কারণে আমরা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছি। এভাবে নিয়োগ বিলম্বের পেছনে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

যোগদান বঞ্চিত শিক্ষক ও আন্দোলনের মুখপাত্র কবির আহম্মেদ বলেন, ২০১৮ সালের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ২৪ লাখ প্রার্থীর মধ্যে গত ২৪ ডিসেম্বর চূড়ান্তভাবে আমরা ১৮ হাজার ১৪৭জন উত্তীর্ণ হই। গত ১৩ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে আমাদের ১৮ হাজার ১৪৭ জনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করে এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ৬১ জেলার প্রার্থীরা নিজ নিজ প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে নিয়োগপত্র ডাকযোগে পেতে থাকি। এমনকি ১৩ ফেব্রুয়ারি আমরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে যোগদানপত্রের স্মারক নম্বরও পেয়ে যাই। কিন্তু আমরা হঠাৎ জানতে পারি ৪৩টি জেলার যোগদান স্থগিত হয়েছে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে। এমন অবস্থায় আমরা আগের চাকরি হারিয়ে নতুন চাকরিতে যোগদান করতে না পেরে বেকার অবস্থায় চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছি।

তিনি আরো বলেন, চাকরিতে যোগদান করতে না পারায় আমরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। মুজিববর্ষের কাউন্ট ডাউন শেষ হওয়ার আগেই আমাদের ৪৩ জেলার ১৮ হাজার ১৪৭ জনের পরিবারে বড় পুরস্কার হিসেবে চাকরিতে যোগদান নিশ্চিত করুন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন যোগদান বঞ্চিত শিক্ষক ইমরুল হাসান, মোশাররফ হোসাইন, আবুল মমিন সরকার ও ইশতিয়াক বাপ্পীসহ ৪৩ জেলায় নিয়োপ্রাপ্ত কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

এর আগে গতকাল শনিবার ওই কর্মসূচির মুখপাত্র মো. কবির আহমেদ বলেছেন, ৪৩ জেলার প্রায় ১৪ হাজার নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেছেন, আমরা ২০১৮ সালে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আমরা নিয়োগপত্রও পেয়েছি। এরপর হঠাৎ করেই ৪৩টি জেলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২২টি জেলার শিক্ষকদের যোগদানের কথা থাকলেও ১৮টি জেলার শিক্ষকরা যোগদান করতে পারে আর বাকিরা যোগদান না করতে পেরে ফিরে আসে।

তিনি আরো বলেছেন, ২০১৮ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর আমরা যে চাকরি করতাম সেটি ছেড়ে দেই। তখন থেকেই মূলত আমরা বেকার হয়ে যাই। নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে থাকায় আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি দেশ গড়ার কারিগরদের দ্রুত যোগদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন। না হলে নিয়োগ বঞ্চিত ১৪ হাজার শিক্ষক এবং তাদের পরিবার রাস্তায় নেমে আসবে।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন