২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

চুল কাটা ‘পছন্দ না হওয়ায়’ নাপিতকে পেটালেন চেয়ারম্যান

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:৫৫ অপরাহ্ণ, ২১ মার্চ ২০২৩

চুল কাটা ‘পছন্দ না হওয়ায়’ নাপিতকে পেটালেন চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: খদ্দেরের চুল কাটা পছন্দ না হওয়ায় এবার নরসুন্দরকে (নাপিত) পিটিয়ে আলোচনায় এসেছেন কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম।

এর আগে বিভিন্ন অজুহাতে মানুষকে পিটিয়ে বারবার আলোচনায় আসেন এক সময় ত্রাণের চাল আত্মসাতের দায়ে বহিষ্কৃত হওয়া জাহেদুল ইসলাম। গত ১৮ মার্চ রাতে এক খদ্দেরের চুল কাটার স্টাইল পছন্দ না হওয়ায় সেলুনকর্মী তপন শীলের চুল কেটে দেন জাহেদুল। শুধু চুল কেটেই ক্ষান্ত হননি, তিনি রাস্তায় ফেলে তপনকে মারধর করেন। মারধরের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তপন শীল কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরং ইউনিয়নের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, টৈটং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। এলাকায় তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আর এ কারণে তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করেন। বিভিন্ন অজুহাতে মানুষকে পেটান। তার বিপক্ষে কেউ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস পান না। প্রথম মেয়াদে চেয়ারম্যান থাকাকালীন ত্রাণের চাল আত্মসাতের দায়ে তিনি বহিষ্কৃত হন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ জুন টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলামের নির্যাতনের শিকার হন রেজাউল করিম নামের এক যুবক। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসলে গ্রাম পুলিশ দিয়ে তাকে ধরে আনান। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি রেজাউলকে পুলিশে দেন।

এমনকি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে উত্ত্যক্তের অভিযোগে তাকে তিন মাসের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছিল। একই বছরের ২২ জুলাই রাতে লোহা চুরির অভিযোগে আব্দুল মোকাদ্দেস নামের এক অটোরিকশা চালককে মারধর করেন জাহেদুল ইসলাম। আব্দুল মোকাদ্দেস একই ইউনিয়নের আলেকদিয়া কাটা এলাকার হোসাইন আলীর ছেলে।

সেলুনকর্মী তপন শীল বলেন, ‘টৈটং ইউনিয়নের হাজী বাজারের দোকানে এসে চেয়ারম্যান নির্যাতন চালালেও নিরাপত্তার ভয়ে চুপ করে আছি। আমাকে জিম্মি করে চেয়ারম্যানের লোকজন ভিডিও বক্তব্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।’

পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুবাইদুল্লাহ লিটন বলেন, ‘রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না থাকলেও হুট করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বনে যান জাহেদুল ইসলাম।

জনপ্রতিনিধিত্ব ও রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করেন জাহেদুল। বছর খানেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করার দায়ে বাবুর্চি মাহবুবুল আলমকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন চেয়ারম্যান জাহেদ।

পেকুয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। চেয়ারম্যান যে কাজটা করেছেন তা খুবই অন্যায়। কারো অধিকার খর্ব করার অধিকার চেয়ারম্যানের নেই। এটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

অভিযুক্ত জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সুন্দরভাবে চুল কাটতে বলেছি। যুবকরা বিভিন্ন স্টাইলের চুল কাটায় বখাটে হয়ে যাচ্ছে। যদি এতে অন্যায় হয় তাহলে অন্যায়।’এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার জানান, ‘মারধরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন