২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

‘ছিনতাইকারী’ পৃথিবীর কক্ষপথে ‘পুঁচকে চাঁদ’

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৫৬ অপরাহ্ণ, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: কে বলে কেবলই জমিনে জটিলতা, মহাশূন্যে সহিংসতা নেই? সৃষ্টিলগ্ন থেকেই সহিংস মহাবিশ্ব। বিশেষত মহাকর্ষ বলপূর্বক তুলনামূলক ছোট বস্তুকে বড়রা নিজের কক্ষপথে, বলয়ে টেনে ফেলছে। এটা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বেলায় সত্যি, মিথ্যে নয় সূর্যের বেলায়ও। এবং মানুষের পৃথিবীও ছিনতাইকারী এক গ্রহ। তারই আরেকটা স্বাক্ষর দিচ্ছে টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ থেকে পেড়ে আনা একটা খবর : পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরছে একটা ‘পুঁচকে চাঁদ’। তা-ও তিন বছর ধরে।

সহআবিষ্কারক ক্যাপার উইশ্চস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন।

বিভ্রান্ত বড় না করতে এখানেই বলে রাখি, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা, চাঁদ কিন্তু একটারে।’ এই ‘আকাশে’ মানে পৃথিবীর কক্ষপথে; আর চাঁদ মানে একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। পৃথিবীর কক্ষপথে মনুষ্যসৃষ্ট কৃত্রিম উপগ্রহের সংখ্যা একটা-দুটা নয়, এখনই সক্রিয় আছে প্রায় এগারোশটা স্যাটেলাইট; নিষ্ক্রিয় আছে আড়াই হাজারের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় ক্যাটালিনা আকাশ জরিপ সংস্থা (ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভে, সংক্ষেপে সিএসএস) জানিয়েছে, তাদের দুই জ্যোতির্বিদ পৃথিবীর কক্ষপথে গাড়ির সমান একটা চাঁদের দেখা পেয়েছেন। উইশ্চস এবং টেডি প্রুইন ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে আকাশে দ্রুতবেগে ধাবমান একটা ক্ষীণ, অনুজ্জ্বল বস্তুকে দেখতে পান। পরের কদিনে আরও ছটি মানমন্দিরে গবেষকরা একই বস্তু পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা হিসাব করে দেখছেন, পৃথিবীর মহাকর্ষ টানের কবলে পড়ে মানবগ্রহের কক্ষপথে আটকা পড়ে আছে তিন বছর।

এই পুঁচকে চাঁদের আপাত নাম ২০২০ সিডি৩। ২০২০ সিডি৩ লম্বায় সম্ভবত ৩.৫ মিটার ও প্রস্থে ১.৯ মিটার। মহাশূন্যে ছোটখাটো বস্তু পর্যবেক্ষণ করে এমন একটি সংস্থা মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার জানিয়েছে, এটি কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ নয়, সে রকম কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। আপাতভাবে মনে হচ্ছে, এটি আসলে গ্রহাণু। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পৃথিবীর মহাকর্ষ বলে ধরা পড়ে গেছে।

এ রকম গ্রহাণু আটকা পড়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০০৬ সালে ধরা পড়েছিল একটি গ্রহাণু। সেটিও ধরা পড়েছিল নাসার অর্থায়নে পরিচালিত সিএসএসের গবেষক দলের চোখে। ২০০৬ আরএইচ১২০ নামের ওই গ্রহাণু পৃথিবীর কক্ষপথে বন্দি ছিল প্রায় ১০ মাস-২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৭ সালের জুন পর্যন্ত।

‘মায়াজালে বন্দি হইয়া আর কতকাল’ থাকবে ২০২০ সিডি৩? সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতি ৪৭ দিনে পৃথিবীকে সে এক চক্কর দিচ্ছে। ধীরে ধীরে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এপ্রিলেই সে বন্দিদশা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে সক্ষম হবে।

এ সময়ের মধ্যে বন্দি গ্রহাণুটি থেকে আমরা কোনো কিছু জানতে, বুঝতে বা শিখতে পারব কি?

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন