১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

জামিন আবেদন নাকচ: পরীমনিকে কারাগারে প্রেরণ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:০০ অপরাহ্ণ, ১৩ আগস্ট ২০২১

জামিন আবেদন নাকচ: পরীমনিকে কারাগারে প্রেরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> রাজধানী ঢাকার বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে এই আদেশ দেন। দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরের আগে পরীমনিকে আদালতে নেওয়া হয়। বেলা ২টা ৩৮ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। সোয়া তিনটার পর রায় আসে। পরীমনিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডির কর্মকর্তা।

অন্যদিকে পরীমনির পক্ষের আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী, মজিবুর রহমানসহ আরও কয়েকজন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আসামির সামাজিক মানমর্যাদা রক্ষা এবং একজন শিল্পী হিসেবে মানসিক উৎপীড়ন থেকে রক্ষার মানবিক তাগিদেই তাকে জামিনে মুক্ত করা আবশ্যক।

পরীমনির মুক্তির দাবিতে সমাজের মুক্তচিন্তার প্রগতিশীলরা সোচ্চার হচ্ছেন। বিজ্ঞ আদালত নিশ্চয়ই পত্রপত্রিকা খুললে প্রতিদিন দেখেন এসব সংবাদ ছাপা হচ্ছে, টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে। দেশের বিশিষ্টজনেরা তার মুক্তি দাবি করছেন।

‘সে যদি এই মামলায় অপরাধী হয়, তাহলে তাকে মামলার বিচারের মধ্য দিয়ে শাস্তি দেওয়া যাবে। কিন্তু আপাতত যেকোনো শর্তে তার জামিন চাই বিজ্ঞ আদালতে।’

আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ২০ বোতল মদ পাওয়া গেছে। মামলার বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন যে, তদন্ত করে সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে। এটা একটি অনিশ্চিত বিষয়।’

তিনি পরীমনির হয়ে বলেন, ‘আমার (পরীমনি) পাসপোর্ট রেখে জামিন দেওয়া হোক। কারণ আইও বলেছেন, তার আবেদনে আসামি পালিয়ে যেতে পারে। আমার পাসপোর্ট জমা রাখলে আমি তো বিদেশে যেতে পারব না। বিশ্বময় অতিমারি সমস্যা চলছে। এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তার এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।

‘সরকার যেভাবে বলবে সেভাবে তদন্ত করার কথা, সেটা হলো আর্মস গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে। র‌্যাব আইনগতভাবে অপারেশন করেন নাই। তারা আসামিকে গ্রেপ্তার করে উত্তরাতে তাদের অফিসে নিয়ে গেছে। তাকে থানায় হস্তান্তর না করে নিজেদের কাছে কয়েক ঘণ্টা রাখার পর তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।’

পরীমনির আইনজীবী তার হয়ে আরও বলেন, ‘আমি কোনো খুনের আসামি নই, আমাকে কেন এত ঘণ্টা আটক রাখা হলো আপনি নিশ্চয়ই তা বিবেচনা করবেন; অবজারভেশন করবেন, জামিন দেবেন।’

অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, ‘আসামির বাসা থেকে প্রচুর দেশি-বিদেশি মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নায়িকার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে দেশের অনেক শিল্পপতি, কোটিপতি ও সম্ভ্রান্ত ঘরের লোকদের ও তরুণ সমাজকে ডিজে পার্টির মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাই মামলার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করছি।

‘তার কাছে এলএসডি পাওয়া গেছে। আর বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছানোর আধা ঘণ্টা পর দরজা খুলেছেন। সেই সময়ের মধ্যে তিনি মদগুলো ঢেলে ফেলে দিয়েছেন।’

উল্লিখিত বক্তব্য দিয়ে আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পরীমনির জামিন নাকচ করেন।

প্রসঙ্গ উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট চিত্রনায়িকা পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই অভিযানে তার বাসা থেকে বিপুল মাদকদ্রব্য উদ্ধারের কথা জানায় বাহিনীটি।

মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ৫ আগস্ট পরীমনির নামে বনানী থানায় মামলা হয়। সে মামলায় প্রথম দফায় তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নায়িকাকে ফের দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন বিচারক। দুই দিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার পরীমনিকে আদালতে তোলা হয়।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন