২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

ঝালকাঠিতে গাবখান ব্রিজে অতিরিক্ত টোল আদায়

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫৬ অপরাহ্ণ, ২৬ নভেম্বর ২০২২

ঝালকাঠিতে গাবখান ব্রিজে অতিরিক্ত টোল আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠির পঞ্চম চীন মৈত্রী সেতু তথা গাবখান ব্রিজে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি ব্রিজে সরকারি নিয়মানুযায়ী টোল ফি নির্ধারণের চার্ট জনসম্মুখে দৃশ্যমান থাকার কথা থাকলেও কোথাও দেখা মেলেনি সেটির।

এ নিয়ে পরিবহন ও মালবাহী গাড়িচালকদের সঙ্গে নিয়মিত বাগ্বিতণ্ডা এবং তাদের নাজেহাল করার অভিযোগও রয়েছে টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে।

সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই এ টোল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অমৃত, প্রাণ ও আরএফএল কোম্পানির গাড়িচালক ও ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপকরা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্সকে ২০১৮ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৭ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার ৭২০ টাকা ইজারা চুক্তিতে টোল আদায়ের কার্যাদেশ প্রদান করে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগ। করোনাকালে সময়ে গাড়ি চলাচল না থাকায় লোকসানের মুখে পড়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানটি।

২০২১ সালের ৩০ জুন কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হলে ইজারা চুক্তি অনুযায়ী মূল টাকাও উত্তোলন করতে পারেনি তারা। তাই ক্ষতিপূরণের দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করে ইজারাদার ওই প্রতিষ্ঠান। আদালতের নির্দেশক্রমে ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে টোল আদায় বহাল রাখে মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স।

মামলা জটিলতার কারণে আদালতের মাধ্যমে ৪টি পে-অর্ডারে ১ কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার ৬৫৬ টাকাও জমা হয়েছে কোষাগারে।

প্রাণ গ্রুপের ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপক মো. নূরে আলম বলেন, ‘আমাদের কোনো ট্রেইলার যান নেই। হেভি ট্রাক, মিডিয়াম ট্রাক ও মিনি ট্রাক রয়েছে।

আমাদের এ তিন ধরনের গাড়ির যেটিই ব্রিজে পারাপারের জন্য যায় তখনই লাল স্লিপে ৩০০ টাকা করে ট্রেইলারের টোল রাখা হয়।

স্লিপে আমাদের গাড়ির নম্বরটিও উল্লেখ করা হয় না। জনসম্মুখে কোথাও কোনো চার্টও টানানো নেই। গাড়ি চালকরা এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করা হয়। নাজেহাল করে মারতেও উদ্যত হয় অনেক সময়।

একই অভিযোগ জানালেন আরএফএল ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন ও অমৃত ফুড কোম্পানির ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপক অনুপ মুখার্জি।

তারা জানান, সম্প্রতি চালুকৃত বেকুটিয়া ব্রিজের টোলঘরে কোন গাড়ির কী পরিমাণ বা কত টাকা সরকার নির্ধারিত টোল, তা প্রকাশ্যে টানানো রয়েছে। কিন্তু গাবখান ব্রিজের টোলঘরে যা ইচ্ছে তাই টোল রাখে। তারা এ বিষয়ে একটি সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেন।

তবে, মেসার্স ইসলাম অ্যান্ড ব্রাদার্সের পক্ষে টোল আদায়কারী শাহ আলম খান ফারসু মোবাইলফোনে জানান, টোল আদায়ের স্লিপে নম্বর লেখা পর্যন্ত গাড়ি চালকরাই অপেক্ষা করে না, টাকা দিয়েই স্লিপ নিয়ে চলে যান।

সড়ক বিভাগ নির্ধারিত মূল্যই টোলে রাখা হয়। প্রাণ গ্রুপের এক লোক এসে আমাদের কাছে ১৮০ টাকা টোলের গাড়িতে ১৫০ টাকা দেওয়ার দাবি করলে আমরা তার দাবি মেনে সেভাবেই টাকা রাখছি।

আগে চার্ট দৃশ্যমান ছিল; কিন্তু মামলা-সংক্রান্ত বিষয়ে সড়ক বিভাগ ও ইসলাম ব্রাদার্সের টোল আদায়ের পালা বদলের কারণে এখন চার্ট নেই।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, প্রাণ গ্রুপের ট্রান্সপোর্টের এক কর্মকর্তা আমাকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন। আমি তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা হবে।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন