২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ঝালকাঠিতে বখাটে স্টাইলে চুলকাটা বন্ধে তৎপর পুলিশ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:১৩ অপরাহ্ণ, ১৩ মার্চ ২০১৯

চুলের একপাশ কাটা। তার ওপর মোটা করে কয়েকটি দাগ। কারও মাথায় আবার মাঝখানে উঁচু রেখে কানের দুই পাশে ছোট করে কাটা। কেউ আবার জেল মেখে চুল সোজা করে রেখেছে। সকাল হলেই ঝালকাঠি শহরের স্কুল-কলেজের সামনে দেখা যায় এসব স্টাইলে চুল কাটা যুবকদের। মেয়েরা বখাটে হিসেবে এসব যুবকদের আখ্যায়িত করেছে। অনেক সময় তাদের দেখে ভয়ও পাচ্ছে মেয়েরা।

ছেলেদের এ ধরনের বখাটে স্টাইলে চুল কাটা বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ। ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসান সেলুন মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। তিনি সেলুন মালিকদের বখাটে স্টাইলে চুল কাটা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। এর ফলে দুই-তিন দিন ধরে শহরের সেলুনগুলোতে স্টাইল করে চুল কাটা বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের চুলের স্টাইল হবে মার্জিত- এ স্লোগান দিয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রচারও শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি শহরে অর্ধশত সেলুন রয়েছে। এসব সেলুনে যুবকরা নানা স্টাইলে চুল কাটেন। চুল কেটে তারা সকাল হলেই শহরের স্কুল ও কলেজের সামনে এসে আড্ডা দেয়। চুলের স্টাইল দেখে মেয়েরা ভয় পায়। চুলের এ ধরনের বখাটে স্টাইল চোখে পড়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসানের।

তিনি স্কুল ও কলেজপড়ুয়া কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে কথা বলে বখাটেপনা ও চুলের স্টাইলের ভয়ের কথা জানতে পারেন। অবশেষে তিনি সেলুন মালিকদের নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি সেলুন মালিকদের মার্জিতভাবে চুল কাটার পরামর্শ দেন। জেলা পুলিশের এ ধরনের উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরাও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের স্কুলের সামনে সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন স্টাইলে চুল কাটা ছেলেরা ঘোরাফেরা করে। তাদের দেখতে ভয় লাগে। শুধু চুল কাটাই নয়, অনেক ছেলে ইদানিং এমনভাবে দাড়ি রাখছেন, তা দেখেও ভয় লাগে।’

ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছেলেরা মনে করে স্টাইল করে চুল কাটলে তাদেরকে মেয়েরা পছন্দ করবে। কিন্তু তাদের উল্টোভাবে যে মেয়েরা অপছন্দ করে সেটা মনে হয় তারা জানেন না। বখাটে স্টাইলে চুল কাটা আমরা পছন্দ করি না। আমাদের অভিভাবকরাও এটা মেনে নেয় না। আমরা চাই কলেজের সামনে এ ধরনের কোনো বখাটে যেন আড্ডা দিতে না পারে, সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসান বলেন, ‘আমরা শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভা করেছি। এসব সভায় মেয়েরা অভিযোগ করেছেন ছেলেদের চুলের স্টাইল নিয়ে। এমনভাবে তারা চুল কাটে যা দেখলে মেয়েরা ভয় পায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সেলুন মালিকদের সংগঠন নরসুন্দর কমিটির লোকজনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের নির্দেশ দিয়েছি বখাটে স্টাইলে চুল যেন না কাটা হয়। আমাদের সঙ্গে তারাও একমত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে অভিভাবকরাও আমাদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। আমরা চাই শিক্ষর্থীদের চুলের স্টাইল হবে মার্জিত।’

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন