২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ঝুঁকিতে বরগুনায় শতাধিক সরকারি ভবন

Saidul Islam

প্রকাশিত: ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ, ২৬ জুলাই ২০২১

 

ঝুঁকিতে বরগুনায় শতাধিক সরকারি ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরগুনা >> বরগুনার আমতলী উপজেলায় শতাধিক সরকারি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অফিস করাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে আবাসিক ভবনগুলোতে বসবাস করছেন। এর মধ্যে ১৫টি ভবন সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ৮ থেকে ৩৯ বছর আগে। ভবনগুলো জরাজীর্ণ হলেও সরকারিভাবে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

জরাজীর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে আমতলী সরকারি কলেজের পেছনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) জন্য দ্বিতল অফিস ভবন, বীজাগার, মেশিন রাখার ভবনও ২টি আবাসিকসহ মোট ৫টি ভবন। সংস্কারের অভাবে ৫টি ভবনই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ৩৫ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ভবনগুলো সংস্কারের অভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় দরজা-জানালার মূল্যবান কাঠ, টিন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় চুরি হয়ে গেছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস ভবনের পিছনে কর্মকর্তাদের আবাসসিক ভবন পদ্মা. মেঘনা, যমুনা তিনটি দ্বিতল ভবন প্রত্যেকটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাস ভবনের পশ্চিম পাশে সৈকত একতলা টিনশেড ভবনের অবস্থাও বসবাবাসের অনপুযোগী।

উপজেলা পরিষদের ব্যাচেলর ডরমেটরি আবাসিক ডরমেটরির অবস্থাও নাজুক বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে বসবাসকারীদের সব ভিজে যায়।১৯৬৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জন্য বর্তমান পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে অফিস এবং পরিবার পরিজন নিয়ে কর্মকর্তাদের বসবাসের জন্য কমপক্ষে ৮টি ভবন নির্মাণ করা হয়। সংস্কারের অভাবে ৭টি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে।

জাতীয় পার্টির সরকারের সময় উপজেলা পরিষদের কম্পাউন্ডের মধ্যে আনসার বিডিপি, মহিলাবিষয়ক, সমাজসেবা অফিসের জন্য আধাপাকা টিনশেডের ভবন নির্মাণ করা হয়। এসব ভবন দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না করায় টিনে মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় বর্ষার সময় পানি পড়ে।

মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা জানান, বর্ষার সময় অফিসে বসা যায় না, সব জায়গায় পানি পড়ে। একই অবস্থা কম্পাউন্ডের অভ্যন্তরে অবস্থিত দ্বিতল ভবনটির। এখানে নিচতলায় রয়েছে সোনালী ব্যাংক, সমবায় অফিস, উপজেলা পরিষদের হল রুম, দোতলায় রয়েছে যুব উন্নয়ন অফিস, পরিসংখ্যান অফিস, খাদ্য বিভাগ, হিসাবরক্ষণ অফিস ও ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য ১টি অফিস। এভবনটি অনেক পুরনো হওয়ায় প্রায়ই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। দেয়ালের অনেক জায়গায় ফাটল ধরায় কর্মকর্তারা ঝুঁকি নিয়ে অফিস করছেন। সমবায় কর্মকর্তা জানান, দিনের মধ্যে দু-একবার চেয়ার সরাতে হয়, কেননা প্রায়ই ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ে।

হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জানান, সারাদিন ভয়ের মধ্য দিয়ে অফিস করি। ছাদের লোহার রড বেরিয়ে গেছে। দরজা-জানালা অনেক পুরনো হওয়ায় ঠিকমতো আটকানো যায় না। কৃষি কর্মকর্তা ও বন বিভাগের জন্য রয়েছে ২টি টিনশেডের অফিস। অফিস ২টি খুবই জরাজীর্ণ। তবে কৃষি অফিসের জন্য সম্প্রতি একটি নতুন ভবন নির্মিত হয়েছে। ২০০৭ সালে সিডরের সময় অফিস দুটির টিন উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পর কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে সেখানে অফিস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অফিস ও আবাসিক ভবনগুলো সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে জরুরিভিত্তিতে এগুলো সংস্কারের জন্য আবারও জানানো হবে।

আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান মুঠোফোনে বলেন, নতুন অফিস ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আবাসসিক ভবনগুলো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন