২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

টানা বর্ষণে বরিশাল নগরীতে হাটুসমান জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪৬ অপরাহ্ণ, ২৩ অক্টোবর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: দুদিনের টানা বর্ষণে বরিশাল নগরীর অধিকাংশ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি প্রবেশ করেছে অনেক বসতবাড়িতেও। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীর জীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে লঞ্চ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত এবং বরিশাল নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে। তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে, এ তথ্য বন্দর বিভাগ নিশ্চিত করেছে।

বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান, নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ ১২ রুটে কোনো নৌযান ছেড়ে যায়নি। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। তবে বরিশাল থেকে রাজধানী ঢাকাগামী লঞ্চ চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে বরিশাল-ঢাকা রুটে বড় লঞ্চ চলাচল করতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাহফুজুর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এ কারণে সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বরিশালসহ নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

কর্মকর্তা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। দিনভর বৃষ্টিপাতের একই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে সকাল থেকে ৬ ঘণ্টার টানা বর্ষণে নগরীর নিচু এলাকাসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বৃষ্টির কারণে সড়ক ও বাজারে মানুষজনের উপস্থিতি খুব কম দেখা গেছে। অনেক দোকানও বন্ধ দেখা যায়। দিনমজুররা কাজে যেতে পারেননি।

বৃষ্টির কারণে নাকাল নগরবাসী। অনেক বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। নগরীর নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত কীর্তনখোলার তীরের জনপদ সাগরদী ধান গবেষণা সড়ক, পূর্ব রুপাতলী, জাগুয়া, ভাটিখানা, নিউ ভাটিখানা, আমানতগঞ্জ, রসুলপুর, পলাশপুর, নবগ্রাম রোডের কিছু এলাকাসহ আরও অনেক এলাকায় হাঁটু পানি দেখা গেছে। সবচেয়ে বড় সঙ্কটে পড়েছে কীর্তনখোলা তীর-সংলগ্ন রসুলপুর, কলাপট্টি, পলাশপুর, বরফকল ও স্টেডিয়াম বস্তির বাসিন্দারা। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সাগরদী ধান গবেষণা সড়কের একাধিক বাসিন্দা সাংবাদিকদের জানান, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাটে পানি জমে যায়। জোয়ার থাকলে তো ভোগান্তির শেষ থাকে না। অনেক সময় বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় পানি ঢোকে। তখন বাসা থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন