২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

তোফায়েল আহমেদকে হটিয়ে দিলেন টিপু মুনশি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:২৪ অপরাহ্ণ, ০৬ জানুয়ারি ২০১৯

রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হওয়ার জন্য ফোন পেয়েছেন। রোববার (০৬ জানুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টিপু মুনশির একান্ত সচিব তুহিন চৌধুরী।

টিপু মুনশি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি তিনি।

প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ ২০০৮ ও ২০১৪ সালে রংপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এমদাদুল হক ভরসা ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭ ভোট।

আগামীকাল সোমবার বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শপথ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের টেলিফোন করা হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তালিকা অনুযায়ী, রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। এবার তাকে হটিয়ে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন টিপু মুনশি।

টিপু মুনশি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার গুয়াবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম রমজান আলী মুনশি ও মায়ের নাম রত্না মুনশি। পোশাক শিল্পের ব্যবসার পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ৬টি আসনের ৬টিতেই জয়লাভ করে জাতীয় পার্টি। এর মধ্যে ১৯৯৭ সালের উপ-নির্বাচনে রংপুর-২ ও রংপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়লাভ করেন এবং সেবারই প্রথম মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্থান পান রংপুর-২ আসনের প্রয়াত আনিসুল হক চৌধুরী এবং রংপুর-৫ আসনের এইচএন আশিকুর রহমান।

২০০৮ সালে ছন্দপতন ঘটে। সেবার ৬টি আসনের মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগ জয় পেয়ে তাদের আধিপত্য জানিয়ে দেয়। ভাঙতে শুরু করে জাপার দুর্গখ্যাত রংপুর। সেই জয়ের ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৪টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই ৪টি আসন ধরে রাখে দলটি।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এই জেলায় আওয়ামী লীগের দুই প্রতিমন্ত্রী থাকার পর আর কেউ পূর্ণমন্ত্রী হতে পারেননি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পরপর দুইবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রীবঞ্চিত ছিল রংপুর। তাই এবার আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রী করার দাবি ওঠে।

রংপুরের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রী করার বিষয়টি জানিয়ে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু বলেন, রংপুরে যত উন্নয়ন হয়েছে তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়েছে। তাই এবারে রংপুর থেকে মন্ত্রী হলে এর ধারা অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরকে বিভাগ করেছেন। এখানে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু নির্মাণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজ থেকে রংপুরের উন্নয়ন করেছেন। রংপুরে আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রী হলে বাকি উন্নয়ন যেমন ঢাকাগামী দিবাকালীন ট্রেন চালু করা, পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ ও রংপুরকে বাণিজ্যিক এলাকায় রূপান্তরিত করার কাজগুলো আরও ত্বরান্বিত হবে।

এদিকে, টিপু মুনশির মন্ত্রী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রংপুরবাসীর মাঝে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার অালী ও সম্পাদক দিলদার আলী বলেন, এবার টিপু মুনশি প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি গত ১০ বছরে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তিনি মন্ত্রী হওয়ায় গোটা রংপুর বিভাগের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন