২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

তোফায়েল আহমেদের জনপ্রিয়তায় ছিটকে পড়েছেন পার্থ?

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮

বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ইতিহাস বলেন অনেকেই। কারণ তার পথ চলা হয়েছিল ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে।

সে দিনের আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেছেন জেল থেকে। বঙ্গবন্ধু যদি সে সময় মুক্ত হতে না পারতেন তাহলে বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতার স্বাদ পেত কিনা তা সন্ধিহান। তারই রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ ৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে মাত্র ২৬ বছর বয়সে ভোলা সদর আসন থেকে এম এন এ নির্বাচিত হয়েছেন।

একাদশ নির্বাচন নিয়ে দশম বারের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এ বর্ষীয়ান নেতা। এরই মধ্যে ৭০, ৭৩, ৮৬, ৯১, ৯৬, ২০০৮, ২০১৪ সাত বার জয়ের মালা তারই পাত্রে আসে। এরই মধ্যে ৯১ ও ৯৬ সালে ভোলা ১ ও ২ আসনে একই সাথে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। তবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাকে ৭৯ ও ২০০১ সালে আমাকে জোর করে হারানো হয়েছে। আমি সবসময় ভোলার মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি।

একাদশ নির্বাচনে তিনি ভোলা সদর ১ আসনে নির্বাচন করবেন।

এলাকাবাসী বলছেন, ভোলাতে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তা সবই তোফায়েল আহমেদের হাত ধরে। ভোলা জেলার প্রধান সমম্যা নদী ভাঙন রোধে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার সিসি ব্লোকের ও বেড়িবাঁধের কাজ করিয়েছেন। তার মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ৩২০০ কোটি টাকার সিসি ব্লোকের মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ করেছেন এ যাবৎ।

এ ছাড়াও এ আসনে তার হাত ধরে গত ১০ বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাড়ে ৫০০ কোটি টাকা, গণপূর্ত বিভাগে ৬০০ কোটি টাকা ও উপজেরা সড়ক বিভাগে ৫৭ কোটি টাকা, জেলা পরিষদে ২৫ কোটি টাকা, শিক্ষা প্রকৌশলীসহ অন্যান্য বিভাগে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করিয়েছেন। এদিকে তার হাত ধরে ভোলাকে বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হয়েছে। এখন শুধু দাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে একনেক সভায় পাশ হলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই কাজ শুরু হবে।

ভোলা সদর ১ আসনে তোফায়েল আহমেদের জনপ্রিয়তা ও উন্নয়নের বিপরীতে নির্বাচন করার কথা ছিল বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। তবে তিনি ভোলা সদর আসন থেকে নির্বাচন করা থেকে ছিটকে পড়েছেন? এমন প্রশ্ন এখন সদর উপজেলার হাজারো মানুষের। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, তোফায়েল আহমেদের উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পার্থ।

তোফায়েল আমেদের নেতৃত্বে সুসংগঠিত শক্তিশালী সাংগঠনিক আওয়ামী লীগের কাছে সাংগঠনিকভাবে ভোলাতে বিজেপির ভীত অনেকটা নাজুক অবস্থা বিরাজ করেছে। বর্তমানে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিটি কমিটি অত্যন্ত শক্তিশালী। এ ছাড়াও গত মাসে ১১৩টি ভোটকেন্দ্র কমিটির প্রায় ১৫ হাজার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরকে নিয়ে বিশাল তৃণমূলের কর্মিসভা সেড়ে ফেলেছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ তৃণমূল জাগরণের প্রধান সমন্বয়কের কাজটি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব। আন্দালিব রহমান পার্থ ২০০৮ সালে একবারের জন্য তিনি ভোলা ১ আসনে বিএনপি জোটের হয়ে জেলা বিএনপির কাঁধে ভর করে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি ভোলাতে আসেননি।

স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে তার ভালো সময় কাটছে না এখন। ২০০৮ থেকে ১৪ সাল পর্যন্ত সদর উপজেলার অনেক জায়গা নদীগর্ভে বিলীন ও বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অনেক ইউনিয়ন পানির নিচে প্লাবিত হয়। তখন তিনি সদর উপজেলার সাংসদ হয়েও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াননি। সেটাই যেন তার জন্য কাল হয়ে গেল। তাই পার্থ সাহেব তোফায়েল আহমেদের আসনে নির্বাচন করার সাহস করছেন না। সে জন্য তিনি ঢাকা ১৭ আসনে নির্বাচন করবেন বলে এমটাই জানা যায়, একাধিক নিউজ পোর্টাল ও বিএনপির একাধিক নীতি নির্ধারকের বরাত দিয়ে।

তবে তাকে বিশ দলীয় জোটের শরিক দল হিসেবে একটি আসন দেওয়া হয়েছে এবং সেই আসন হিসেবে তিনি ভোলা ১ নয়, ঢাকা ১৭ আসনকে বেছে নিয়েছেন এমটাই শোনা যাচ্ছে।’

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন