২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

দুই বছর পরেও চালু হয়নি আবহাওয়া তথ্য বোর্ড; কৃষি আবহাওয়ার পূর্বাভাস পান না কৃষক

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:১৬ অপরাহ্ণ, ১৬ অক্টোবর ২০২১

দুই বছর পরেও চালু হয়নি আবহাওয়া তথ্য বোর্ড; কৃষি আবহাওয়ার পূর্বাভাস পান না কৃষক

বরগুনা প্রতিনিধি >> প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও কৃষি বিষয়ে চাষীদের আগাম তথ্য দিতে সরকার সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে আবহাওয়া তথ্য বাতায়ন বোর্ড চালুর উদ্যোগ নেয়। এজন্য প্রতিটি ইউনিয়ন কৃষি অফিসে ট্যাবসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বসানো ছাড়াও একজন করে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একই প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবহাওয়া তথ্য বোর্ড বসানো হয়। কিন্তু দুই বছরেও চালু না হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ফসল রক্ষায় এ বোর্ড কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না। ফলে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে কৃষিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে আগাম পূর্বাভাস সুবিধা পাচ্ছেন না চাষীরা। নষ্ট হচ্ছে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে সচেতনতা বাড়িয়ে খাদ্য শস্যসহ বিভিন্ন ফসল রক্ষায় চাষিদের আগাম তথ্য দিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতিকরণ প্রকল্প চালু করে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বেতাগী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে বসানো হয় কৃষি আবহাওয়া তথ্য বোর্ড। তবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও এখনও ১টি ইউনিয়নের কার্যালয়ে কৃষি আবহাওয়া তথ্য বোর্ড বসানো হয়নি।

এ তথ্য বোর্ডের মাধ্যমে চাষিদের প্রতিদিনের খরা, ঝড়-বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, দাবদাহ, শীত, কুয়াশা, বন্যাসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে আগাম তথ্য সেবা দেওয়ার কথা। আবহাওয়া কবে কেমন থাকবে এবং চলতি ফসলের জন্য তা কতটুকু উপকারী ইত্যাদি বিষয় কৃষকরা এ তথ্য বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারবেন। আগাম তথ্যের ভিত্তিতে তারা ফসল রক্ষায় প্রস্তুতি নিতে পারবেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছরেও এ তথ্য বোর্ড চালু না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন চাষিরা।

সরেজমিনে উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নে গিয়ে কার্যালয়ের সামনে আবহাওয়া তথ্য বোর্ড ও কেন্দ্র স্থাপন দেখা যায়। তবে বোর্ডে নেই কোনো হালনাগাদ তথ্য। দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হতে বসেছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ট্যাবসহ একজনকে নিয়োগ দেওয়া হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। একই দশা বেতাগী সদর, বিবিচিনি, হোসনাবাদ, বুড়ামজুমদার ও সড়িষামুরি ইউনিয়ন পরিষদের। কৃষি তথ্যসেবা চালু না হওয়ায় এসব ইউনিয়নের কৃষকরা সুফল পাচ্ছেন না।

মোকামিয়া ইউনিয়নের কাইয়ালকাটা গ্রামের কৃষক মামুন হাওলাদার বলেন, ‘খরা ও অতিবৃষ্টিতে প্রতিবার ফসলের ক্ষতি হয়। মাঠে ফসল রেখে আমরা ঘুমাতে পারি না। আগাম কৃষি তথ্য পাওয়ার খবরে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু দুই বছরেও ইউনিয়নে গিয়ে কিছু পাইনি। অবশ্য সরকারি কাজ-কারবার এমনই। দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলেও কৃষি বিভাগের কর্মীরা খোঁজ পর্যন্ত নেন না।’

হোসনাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের কৃষক বশির হাওলাদার বলেন, দুই বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদে কৃষকদের আবহাওয়ার তথ্য দেওয়ার জন্য কিছু মেশিনপত্র লাগানো হয়। কিন্তু লাগানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত ওই মেশিনপত্র থেকে আমরা কোন কৃষকরা পাইনি।

এসব বিষয়ে বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, তথ্য
দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি থাকলেও লোকবল এবং প্রশিক্ষনের অভাবে এটি চালু
করা যাচ্ছে না।

গ্রামীন কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে দ্রুতই আবহাওয়া তথ্য বাতায়ন বোর্ড চালু করার দাবি চাষীদের।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন