২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

দেশের সবগুলোয় জেলায় গাছ লাগিয়েছেন এই তরুণ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:০৩ অপরাহ্ণ, ২৭ জুন ২০২১

দেশের সবগুলোয় জেলায় গাছ লাগিয়েছেন এই তরুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> বরিশালসহ দেশের ৬৪ জেলায় গাছ লাগিয়েছেন সিলেটের তরুণ মুমিনুল হক ফাহিম। ‘আসুন সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ স্লোগানে নিজ হাতে ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-সিলেট জেলার কো-অর্ডিনেটর ফাহিম এই গাছ লাগান। তিনি এই সামাজিক কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘প্লান্টিং ট্রিজ ইন ৬৪ ডিস্ট্রিক্স অব বাংলাদেশ’। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘জাতিসংঘের ২৬ তম জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনকে সামনে রেখে ব্রিটিশ কাউন্সিল সারা বিশ্বব্যাপী তরুণ জলবায়ু যুদ্ধাদের জন্য ‘কপ-২৬ চ্যালেঞ্জ ফান্ড’ নামে একটি অর্থায়ন প্রকল্প চালু করে।

জাতিসংঘের ২৬তম জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন যা ‘কপ ২৬- ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্স’ নামেও পরিচিত। যেটি এই বছরের নভেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে অনুষ্ঠিত হবে যার আয়োজনে থাকছে ইউকে। মূলত এই সম্মেলনকে সফল করার জন্য অর্থায়ন প্রধান করতেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। বরিশালটাইমস।

‘ইয়োথ এঙ্গেজমেন্ট কপ-২৬’ এ ৬৪ জেলায় বৃক্ষরোপণের একটি সামাজিক কর্ম প্রকল্প শেয়ার করেন মোমিনুল হক ফাহিম যা গ্রান্টেড হয়। ২৩ বছর বয়সী ফাহিম মূলত ৬৪ জেলায় বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেন ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে নিজের ছাদ বাগান থেকে। তারপর ২৪ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ি,ফরিদপুর, শরীয়তপুর মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ এবং বরিশাল বিভাগের বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর এবং খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট এবং মেহেরপুর জেলাসহ মোট ১৫ টি জেলায় বৃক্ষরোপন করে সিলেটে ফিরে আসেন।

তারপর ২০২০ সালে করোনাভাইরাস এর কারণে তার এই প্রজেক্টটি থেমে যায়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের মে মাসে যখন ব্রিটিশ কাউন্সিলের অর্থায়ন পায় তখন তার এই কার্যক্রম আবার শুরু হয় ২১ মে সুনামগঞ্জ জেলাতে বৃক্ষরোপণ এর মধ্যে দিয়ে। এখান থেকেই শেষ ৪৯ টি জেলায় বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেন।

২৪ মে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলাতে বৃক্ষরোপন করা হয়। হবিগঞ্জ জেলাতে আইডিয়াল হাই স্কুলে এবং মৌলভীবাজার জেলাতে বেগম রাছুলজান আব্দুল বারী উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ করা হয়।

তারপর ২৮ মে থেকে ২৪ জুন এক টানা ২৮ দিনে ৬ টি বিভাগের (খুলনা বিভাগ,রাজশাহী বিভাগ,রংপুর বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগ, ঢাকা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগ) ৪৫ টি জেলায় বৃক্ষরোপন করে ৬৪ জেলায় বৃক্ষরোপন কর্মসূচির শেষ করেন কক্সবাজার এসে। ফাহিমের সঙ্গী ছিলেন জয়ন্ত পাল, দূর্জয় রায়, জয় ভট্টাচার্য্য এবং আমিনা বেগম।

বৃক্ষরোপনের জায়গা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন বিভিন্ন জেলার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও অফিস। যেমন ঢাকা জেলাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম জেলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি জেলা রেড ক্রিসেন্টের অফিস, কক্সবাজার জেলা সাহিত্যিকা উচ্চ বিদ্যালয় ইত্যাদি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মোমিনুল হক ফাহিম ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সিলেট জেলার সমন্বয়ক। পাশাপাশি তিনি অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথেও জড়িত। অবলা প্রাণীদের অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার এই মানুষটি বেশ ভ্রমণপিপাসুও বটে। তিনি ইতিমধ্যে ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মাত্র ২১ বছর বয়সে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ভ্রমণ সম্পন্ন করেছেন। তিনি ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশের কপ-২৬ ইয়ূথ এনগেজমেন্ট চ্যালেঞ্জ ফান্ড জিতে নেন তাঁর ৬৪ জেলায় গাছ লাগানোর চমৎকার আইডিয়ার মাধ্যমে। এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেই তিনি এই প্রকল্প পরিচালনা করছেন।

৬৪ জেলাগুলোতে ফলজ গাছ, ঔষধি গাছ, বনজ গাছ ও কাট গাছ লাগিয়েছেন যেমন কৃষ্ণচূড়া, আমলকি, হরতকি, বহেরা, নিম, রাধাচূড়া, মিনি ট্যাগ, মেহগনি, বেটেল, বাদাম, কাগজি লেবু, পেয়ারা, জামরুলসহ বহু মূল্যবান বৃক্ষ রোপন করেন।

বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ, গাছ লাগানোর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে মানুষদের সাথে কথা বলেন তিনি।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন