২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

দেশ আজো চলছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩০ অপরাহ্ণ, ০৯ আগস্ট ২০১৯

বেদনাবিধুর আগস্ট মাসের আজ শুক্রবার, নবম দিন। শোকাবহ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। প্রতিবছরের মতো এবারো শোকের মাস শুরুর দিন থেকে নানা অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আজো জাতি নানা অনুষ্ঠান পালন করবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী ও দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন রাজধানীসহ সারা দেশে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসেই বাঙালি হারিয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৪৪ বছর আগের ১৫ আগস্টে সাম্রাজ্যবাদীদের মদতপুষ্ট এ দেশে কতিপয় কুলাঙ্গার স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

ঘাতকরা সেদিন রেহাই দেয়নি তার শিশুপুত্র রাসেলসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের। তার বড় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও ছোট মেয়ে শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান। সেদিন খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পেরেছে ঠিকই, কিন্তু তার দর্শনকে হত্যা করতে পারেনি। তিনি আজো বেঁচে আছেন প্রতিটি বাঙালির হূদয়ে। তিনি অবিনশ্বর।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও রাজনৈতিক তৎপরতা খেয়াল করলে দেখা যায়, তিনি ছিলেন আজীবন মানবদরদি। শোষণ-বঞ্চনার অবসানই ছিল তার মূল লক্ষ্য। সেটা যেমন জাতি হিসেবে বাঙালির তেমনি স্বতন্ত্রভাবে প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রেও। পুরো জীবন দিয়ে তিনি প্রমাণ করে গেছেন তার রাজনীতি ছিল মানুষের কল্যাণে। একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে বাঙালির মুক্তি চেয়েছিলেন তিনি। আমৃত্যু সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল গরিব মানুষের সেবা করা। তিনি গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মুখে খাদ্য তুলে দিতে চেয়েছেন। তাদের মাথার ওপর ছাদ দিতে চেয়েছেন। শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই তার রাজনৈতিক দর্শনের মূল প্রতিপাদ্য।

বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিজীবনে, রাজনীতিবিদ হিসেবে, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সেই দর্শনের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তিনি ভোগে বিশ্বাসী ছিলেন না। যার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন একাধিকবার মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে। জাতির জনক নিজের বা তার পরিবারের দিকে তাকাননি। যার প্রমাণ পাওয়া যায় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় প্যারোলে মুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে। একজন মানুষ যিনি তার ৫৫ বছরের জীবনে প্রায় ১৩ বছর জেলে ছিলেন। দিনের পর দিন পরিবারকে সময় দিতে পারেননি, নিজে পরিবারের সান্নিধ্য পাননি। আরাম-আয়েশ-বিলাস কী জিনিস তিনি জানতে পারেননি। মানুষের জন্য, জনগণের জন্য, জাতির জন্য তার কাজ করার আকুলতা খুঁজে পাওয়া যায় তার দেওয়া বক্তব্যে। তিনি নিজ কণ্ঠেই বলে গেছেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, বাংলার মানুষের মুক্তি চাই।’ এ দর্শনই তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন চারদিকে। যে রাজনীতিতে ত্যাগ এবং মানবসেবাই মূলকথা।

পৃথিবীর ইতিহাস বলে একজন রাজনীতিবিদ বা নেতাকে হত্যা করে তার আদর্শ ও দর্শন হত্যা করা যায় না। একজন রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করে সেই রাষ্ট্রের যেমন মৃত্যু হয় না, তাতে রাষ্ট্রের দর্শনেরও অবসান হয় না। বঙ্গবন্ধু হত্যার এত বছর পর এসে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা এর প্রমাণ পাই। আজ বাংলাদেশ চলছে তারই নির্দেশিত পথে। রাজনীতির মূল উদ্দেশ্যই হলো জনকল্যাণ। একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন, একটি জাতির উন্নয়ন-জনকল্যাণ বই আর কিছু নয়। বাংলাদেশ আজ সে পথেই এগিয়ে চলছে।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন