২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

দেশ উন্নয়নে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৫৫ অপরাহ্ণ, ০১ এপ্রিল ২০২৩

দেশ উন্নয়নে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে

দৌলতখান প্রতিবেদক:: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অগ্রদূত সংস্থা-এএসের নির্বাহী পরিচালক মো: জাকির হোসেন চৌধুরী বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে স্বত:স্ফূর্ত ও প্রত্যক্ষভাবে সরকারের সহায়ক হিসেবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তথা এনজিওগুলো যার-যার অবস্থান থেকে কাজ করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওদের অবদান অন্যতম। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংঙ্গে একত্রিত হয়ে স্বাস্থ্যখাতে এনজিওগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনার সাথে একত্রিত হয়ে এনজিওগুলো সমাজের পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অনগ্রসর জনসাধারণকে অন্তর্ভূক্ত করে উন্নয়ন কার্র্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের অধিকার আদায় এবং দারিদ্রতা হ্রাস করণে সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সরকারের টিকাদান কর্মসূচিতে জনসাধারনের অংশগ্রহণ ও সচেতনতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে এনজিওগুলো প্রত্যক্ষভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুদেরকে টিকাদান কেন্দ্রে আনার উদ্যোগ নিশ্চিত করেছে। এনজিওগুলো জনসাধারনের চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, খোলা পায়খানা ব্যবহারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি পায়খানা ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদান করেছে।

জাকির হোসেন বলেন, সমাজের কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা, বয়:সন্ধিকালে করণীয় ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা ও চর্চা করনের লক্ষে বিনামূল্যে উপকরণ বিতরণ ও টিকা গ্রহণে আগ্রহী করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এনজিওগুলোই করেছেন। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের যত্ন, প্রসবকালীন ও পরবর্তী সময়ে মায়ের যত্ন এবং নবজাতক ও শিশুর যত্ন বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়নসহ ধাত্রী প্রশিক্ষণ দিয়েছে এনজিওগুলোই। সমাজের এসিড ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে ক্যাম্পেইন এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎিসা, আইনগত সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থার সহযোগিতা করেছে এনজিওরাই। যুদ্ধবিধ্বস্ত এবং পরবর্তী সকল মহামারীর সময়ে “এক মুটো গুড়, তিন আংগুলের এক চিমটি লবণ ও আধা লিটার বিশুদ্ধ পানি” এই শ্লোগান দিয়ে এনজিও কর্মীরা সমাজের প্রতিটি ঘরে ঘরে স্যালাইন বানানোর পদ্ধতি শিখিয়েছে এবং ব্যবহারের নিয়ম পৌছে দিয়েছে মানুষের কাছে। তখনকার সময়ে ডায়রিয়া প্রতিরোধে পানিশূন্যতা ও লবণের ঘাটতি দূর করার গ্রহণযোগ্য খাবার সৃষ্টি করেছিল এনজিওগুলো। স্যালাইন তৈরির এই পদ্ধতির সাফল্য আজো শতাব্দীর সেরা অগ্রগতি বলা যায় এনজিওগুলোর। যার ফলে বাংলাদেশে ক্রমাগতভাবে হ্রাস পেয়েছে ডায়রিয়ায় মহামারির আকার।

এই এনজিও কর্মী বলেন- বাংলাদেশে এনজিওগুলো শিশুদের শিক্ষা, বয়স্কদের শিক্ষা, নারীর শিক্ষা, জেন্ডার শিক্ষাসহ বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে নিরক্ষরতার হার দুর করতে যেসব জায়গায় কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই সেখানে শিশু ও বয়স্কদের জন্য আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে এনজিওগুলোই।

এছাড়াও সমাজের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও বাধামুক্ত জীবনধারনের লক্ষে এনজিওগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলে আজ ৫২ বছর পরে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মাথা উচু করে অগ্রগতির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। কিন্তু অতি পরিতাপের বিষয় বর্তমানে বৈশ্বিক মন্দা, কোভিড-১৯, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের আগ্রসনের ফলে কর্ম হারিয়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দরিদ্রের সারিতে নেমে যাচ্ছে।’

এছাড়াও বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এবং নদীভাঙ্গনের কারনে প্রতিদিনই গৃহহীন হচ্ছেন উপকুলবর্তী জনসাধারণ। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও রাজনৈতিক অস্তিরতা এবং র্দুনীতির কারনে আজ সমাজের নিম্নায়ের মানুষ গুলো জীবনধানের সক্ষমতা হাড়িয়ে ফেলেছে। এই বাস্তবতা থেকে উত্তোরনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ এবং এনজিওগুলোকে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত করে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করি।’

21 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন