২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

নলছিটিতে ভাইসহ সাবেক জনপ্রতিনিধিকে নৃশংসভাবে কোপাল সন্ত্রাসী বাহিনী

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৪৫ অপরাহ্ণ, ০১ এপ্রিল ২০২৩

নলছিটিতে ভাইসহ সাবেক জনপ্রতিনিধিকে নৃশংসভাবে কোপাল সন্ত্রাসী বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও সংবাদদাতা নলছিটি:: ঝালকাঠির নলছিটির মোল্লারহাটে সাবেক একজন প্রতিনিধিকে নৃশংসভাবে কুপিয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী। শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় ভারানী বাজারে সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কবির হোসেন এবং তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম মাহাবুবুর রহমান সেন্টুর ক্যাডার মো. আলকাস হাওলাদারসহ অন্তত ১০ থেকে ১২ জনের একটি বাহিনী। একপর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাবেক জনপ্রতিনিধি এবং তার ভাইকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। গতকাল বিকেলের এই রক্তারক্তির ঘটনায় শনিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট থানায় কোনো মামলা গ্রহণ বা অভিযুক্তদের কেউ গ্রেপ্তার না হলেও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রসহ বিভিন্ন মাধ্যম জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে ভারানী বাজারের পাশে স্থানীয় বাসিন্দা বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম মাহাবুবুর রহমান সেন্টুর লোক আব্দুল খালেক হাওলাদার পুকুরে পানির পাম্প লাগিয়ে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে পানি দিচ্ছিলেন। পানির পাইপ সড়কের ওপর থাকায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হওয়ায় তা সরিয়ে ফেলতে বলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল খালেক হাওলাদারের ছেলে সাগর হাওলাদার, শফিক হাওলাদার এবং তার ভাগ্নে আলকাস হাওলাদারসহ ১০ থেকে ১২ জন একত্রিত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেন ও তার বড় ভাই দেলোয়ার হোসেনের ওপর হামলা করে। এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

প্রত্যক্ষদর্শী একটি সূত্র জানায়, সাবেক চেয়ারম্যানের ওপর বর্তমান জনপ্রতিনিধির সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রকাশ্যে এই সশস্ত্র হামলা কাছে থেকে ভারানী বাজারের ব্যবসায়ীসহ অনেকে প্রত্যক্ষ করলেও তাদের রক্ষার্থে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। বরং তারা যখন রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন সন্ত্রাসীরা বীরদর্পে স্থান ত্যাগ করে। এরপর স্থানীয়রা সাবেক চেয়ারম্যান এবং তার ভাইকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু তাদের উভয়ের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার লক্ষে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

শেবাচিমে চিকিৎসাধীন সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেনের সাথে থাকা স্বজনেরা বরিশালটাইমসকে জানান, বর্তমান জনপ্রতিনিধির সন্ত্রাসী বাহিনী রাস্তার ওপর পানির পাইপ এবং কাঠ রেখে ভবন নির্মাণকাজ করছিল। এতে স্থানীয়দের চলাচলে ভোগান্তি দেখা দেয় এবং একই স্থানে নির্মাণসামগ্রীতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কিছুদিন পূর্বে জনৈক দবির উদ্দিন নামক এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়। সবকিছু মিয়ে তাদের সতর্ক দেওয়া হয় এবং কাজ শেষে নির্মাণসামগ্রী সড়ক থেকে অন্যত্র সরিয়ে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতে তারা সংক্ষুব্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে হামলা করে। একপর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকেসহ বড় ভাইকে নৃশংসভাবে কোপায়।

এই বিষয়ে জানতে বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম মাহাবুবুর রহমান সেন্টুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

শুক্রবার বিকেলের নৃশংস এই ঘটনায় থানা পুলিশ শনিবার দুপুর পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি থানায় কোনো মামলাও হয়নি।

শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ফোন করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে নলছিটি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন, ঘটনার পর পুলিশ পাঠিয়ে সেখানকার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। কিন্তু ভুক্তভোগীদের কেউ বা তাদের স্বজনেরা কোনো অভিযোগ করেনি। এই কারণে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না।’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন