২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

নির্বাচনী প্রচারে সরগরম মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০৯ অপরাহ্ণ, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

মাহমুদুল হাসান, মেহেন্দিগঞ্জঃঃ ৩০শে জানুয়ারি শনিবার অনুষ্ঠিতব্য  ৫ম মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে শেেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচারে এখন সরগরম মেহেন্দিগঞ্জ পৌর এলাকা। নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী,  ৩৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী হিসাবে ১১জন প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা নিজ নিজ পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় ও গণসংযোগ চালিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। ইতিমধ্যে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড। হাট-বাজার, চায়ের দোকান, অফিস ও ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠানে এখন শুধু নির্বাচনী আলোচনা। নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে ক্ষমতাসীন নৌকা মার্কার প্রার্থী কিছুটা শক্ত অবস্থান থাকলেও বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীকে শেষের দিকে এসে তেমন একটা প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না নির্বাচনী মাঠে। এমনকি পৌরসভায় সবগুলো এলাকায় তাদের পোস্টারের দেখা মিলছেনা।
এ ছাড়া  পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডেই ক্ষমতাসীন দলের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় নির্বাচনে উৎসবের আমেজ রয়েছে। তবে এই উৎসবের আমেজ শেষ পর্যন্ত নাও থাকতে পারে বলে ভোটারদের মাঝে কানাঘুষা চলছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পযর্ন্ত পৌরসভার অলিতে গলিতে হ্যান্ড মাইক দিয়ে প্রার্থীদের প্রচারণার কাজ চলছে। ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব কামাল উদ্দিন খান দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে শো-ডাউন, উঠান বৈঠক, গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। তার দাবি সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাকে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করবেন এবং তিনি নির্বাচিত হলে পৌরসভার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখাসহ অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো সমাপ্ত করতে ভূমিকা রাখবেন।
অপরদিকে, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জিয়াউদ্দিন সুজনের ধানের শীষ প্রতীকের লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার বা গণসংযোগেও অনেকটা ভাটা পড়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা তার পোস্টার, ব্যানার ছিড়ে ফেলাসহ  প্রচার-প্রচারণায় নানা ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি তিনি রির্টানিং কর্মকর্তাকে জানালেও এর প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন।
তবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এবং ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে তিনিও জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেণ।
এছাড়া নির্বাচনের মাঠে আরেক মেয়র প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন মনোনীত ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর হোসেন গাজীকেও তেমন একটা দেখা যায়নি। তবে পৌর বন্দরের কিছু কিছু স্থানে পোস্টার ছাড়াও মাঝে মধ্যে মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণা চলছে তার। তিনিও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট আয়োজনের জোর দাবি জানান।
এদিকে সচেতন ভোটাররা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, এর আগের কয়েকটি পৌরসভা নির্বাচনও দেখেছি। অনেকেই নির্বাচনের আগে নানা ধরনের আশ্বাস দেন, কিন্তু ভোটে জয়ী হওয়ার পর আর কোন খোঁজ-খবর থাকে না। সে জন্য এবার বুঝে শুনে সৎ এবং যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।
তারা আরও বলেন, মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভাটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি গত কয়েক দশকে। তবে এবার মেয়র হিসাবে যে নির্বাচিত হবে তার উচিৎ হবে মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভা হিসাবে গড়ে তুলে পৌরবাসীকে উপহার দেওয়া। তবে ভোটারদের মনে এক ধরনের আতংকও বিরাজ করছে। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী সহিংসতায় এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতসহ একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীসমর্থক আহত হওয়ার ঘটনায় তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে মানসিক ভাবে বাধাঁ প্রাপ্ত হচ্ছে।
ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রশাসনের পক্ষথেকে বাড়তি নিরাপত্তা গ্রহণ করে ভোটার মনে আস্থা ফিরাতে পারলেই ভোট গ্রহণের দিনটি উৎসবের আমেজে ভরে উঠার সম্ভাবনাও আছে।
এদিকে  প্রশাসনের পক্ষথেকে ভোটারদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে, যার ভোট সে দিবে, যাকে খুশি তাকে দিবে। এজন্য পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষথেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষে যা যা প্রয়োজন তার সবই করা হবে। কেউ যদি নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবার পৌরসভা নির্বাচনে মোট ২৫ হাজার ৮৮৮ জন ভোটার ৯টি কেন্দ্রে তাদের ভোট প্রদান করবেন। যাদের মধ্যে ১৩ হাজার ১৭৩ জন পুরুষ ও ১২ হাজার ৭১৫ জন নারী ভোটার রয়েছেন। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলে ভোটের সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে।’
2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন