১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত: ভোলার নদীসমূহে চলছে মাছ শিকারের মহোৎসব

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, ৩১ মার্চ ২০২৩

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত: ভোলার নদীসমূহে চলছে মাছ শিকারের মহোৎসব

সংবাদদাতা, ভোলা:: নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে মাছ শিকারের মহোৎসব। প্রতিদিন শত শত জেলে দিন রাত আইন অমান্য করে মাছ ধরছে। এমনকি মৎস্যঘাটগুলো থেকে শুরু করে হাটবাজারে প্রকাশ্য চলছে রমরমা মাছের কেনা-বেঁচা। তবে জেলেরা বলছেন- তাদের সরকারি যে বরাদ্দ চাল দেওয়ার কথা ছিলো তাও সকলের ভাগ্যে জুটে না। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় তাই বাধ্য হয়ে জীবিকার প্রয়োজনে তাদের নদী নামতে হচ্ছে। তবে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে নদীতে অভিযান চলছে বলে তারা জানিয়েছেন।

ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর তীরে গেলেই এখন দেখা যাবে শত শত নৌকা ও ট্রলার নদী থেকে মাছ শিকারে ব্যস্ত। দেখে বুঝতেই পারা যাবে না যে নদীতে মাছ ধরার ওপর সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে। অথচ মাছের অভয়াশ্রম সৃষ্টির লক্ষে চলছে ২ মাসের জন্য সকল ধরনের মাছ ধরার ওপর মৎস্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু মাছ ধরা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা মানছে না ভোলার অধিকাংশ জেলে আড়ৎদারসহ মৎস্যজীবীরা। জেলেরা সকাল বিকাল ও রাতে নদীতে মাছ শিকারের এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। আর এসব মাছ জেলার ছোট বড় শতাধিক মৎস্য ঘাটে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু জেলেরা বলছে, তারা পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই জেল জড়িমানা মাথায় নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে যাচ্ছেন। কারণ তাদের বিকল্প কোন কর্মসংস্থান নেই। তদুপরি রয়েছে, বিভিন্ন এনজিও এবং সমিতির ঋনের সাপ্তাহিক কিস্তির টাকা দেওয়ার চাপ। তাই বাধ্য হয়ে তারা নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছে। আবার অনেকইে কিস্তি দেওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অন্যত্র।

এদিকে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় রয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ জেলে। তার মধ্যে সরকারি নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার। কিন্তু ২ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ের জন্য বরাদ্দ এসেছে ৮ হাজার ৯৪১০ পরিবারের। এতে গত বছরের ন্যায় এবার সকল জেলেদের ভাগ্যে সরকারি চাল জুটবে না। বরাদ্দকৃত চাল কিছু কিছু ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে দেয়া হলেও অধিকাংশ জেলেদের মাঝে এখনো দেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে ভোলার ইলিশা, রাজাপুর, ভোলার খাল, নাছির মাঝি, তুলাতুলি, দৌলতখানের মাঝিরঘাট, মুন্সির হাটের মৎস্যঘাটে দেখা যায়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলে আড়ৎদাররা হাক ডাক দিয়ে মাছ বিক্রি করছেন। এমনকি ভোলর ৩৮টি বরফ কলেও চলছে রমরমা বিক্রি। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব বরফ কল বন্ধে কঠোর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

এদিকে মাছ ধরা বন্ধে ভোলা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নদীতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে মৎস্য বিভাগ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, জেলদের পুনবাসনের চাল ইতোমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে। যারা এখনও চাল পায়নি, তাদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করা হবে। এছাড়া এনজিও’র ঋণের টাকা ২ মাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে তারা উদ্যোগ করেছেন বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, ভোলা সদরের ইলিশা মেঘনা থেকে চরপিয়াল ও তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চররুস্তম পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার এলাকাকে মাছের অভয়াশ্রম হিসাবে ঘোষণা করে গত ১ মার্চ থেকে -৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সকল ধরনের মাছ ও জাল ফেলা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য বিভাগ।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন