২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

পদ্মাসেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল থেকে যাচ্ছে এক লাখ মানুষ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫২ অপরাহ্ণ, ২৩ জুন ২০২২

পদ্মাসেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল থেকে যাচ্ছে এক লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: সেই শুভক্ষণের বাকি আর মাত্র ২ দিন। ২৫ জুন উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে দেশবাসীর প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু। বহুমুখী এই সেতুর উদ্বোধনকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে দেশব্যাপি চলছে নানামুখী তৎপরতা এবং পরিকল্পনা। বিশেষ করে স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন মহল সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশের সবচে সেতু উদ্বোধন আয়োজন ভুণ্ডুল করতে বিশেষ কোনো মহল বা শক্তি যেন পন্ড করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বেশকিছু দিক-নির্দেশনা। সরকারের এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে বরিশাল পুলিশ প্রশাসন। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগও স্বপ্নের এই সেতু উদ্বোধন আয়োজনকে তরান্বিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। পদ্মাপাড়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বরিশাল থেকে অন্তত ১ লাখ মানুষ সমাবেত করার ঘোষণা দিয়েছে। ২৪ জুন রাত ১০টার দিকে বিলাসবহুল ৬০টি লঞ্চে এসব লোক বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে রওনা দিয়ে যাবে। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা এই তথ্য নয়া শতাব্দীকে নিশ্চিত করেন।

এর আগে পদ্মাসেতু উদ্বোধন উপলক্ষে এক বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ঘোষণা দেন ২৫ জুন পদ্মাতীরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে অন্তত এক লাখ লোক যোগ দেবে। লঞ্চ ও সড়কপথে সমসংখ্যক যাওয়া আসার ব্যবস্থা করতে ডাকসারির নেতাদের নির্দেশনাও দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা। নেতা হাসানাতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন তার ছেলে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র সেরনিয়বাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং একই সংগঠনের সহ-সভাপতি কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টুসহ বেশ কয়েকজন।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস জানান, তাদের নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র দেওয়া ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় করাসহ লঞ্চ এবং বাস উভয় পরিবহন নির্ধারণ করেছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বা দেশে কোনো বড় ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না হলে লোকজন নিয়ে ২৪ জুন রাতে পদ্মাসেতুর উদ্দেশে রওনা দেওয়া হবে।

তবে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে- পদ্মাপাড়ে বরিশাল থেকে এক লাখ লোক নেওয়ার যে টার্গেট নেয়া হয়েছে তার মধ্যে ২৫ হাজার থাকছে নগরীর বাসিন্দা। ২৪ জুন রাতে বরিশাল নৌবন্দর থেকে ১০ টি লঞ্চযোগে এই সমস্ত লোক মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নেতৃত্বে রওনা দেবেন। তবে কিছু লোক ২৫ জুন সকালে সড়কপথে রওনা দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের জন্য অবশ্য নথুল্লাবাদ টার্মিনালে বাসের ব্যবস্থা থাকেছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও বাস এবং লঞ্চযোগে আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা শোনা গেছে। বিশেষ করে উজিরপুর, বানারীপাড়া, গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এলক্ষে প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছেন।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু নিশ্চিত করেন স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লোক নিয়ে বরিশাল নৌবন্দর থেকে ১০টি বিলাসবহুল অর্থাৎ তিন এবং চারতলা বিশিষ্ট লঞ্চ ছেড়ে যাবে। এছাড়া জেলার ১০ উপজেলা থেকে আরও চারটি করে লঞ্চ যাচ্ছে। পাশাপাশি নথুল্লাবাদ টার্মিনালসহ উপজেলাগুলো থেকে লোক পরিবহনের জন্য বাসও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। তবে লোকজন যে পরিবহনেই যাক না কেনো সকলে পদ্মাপাড়ে নেমে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথেই একটি স্থানে সমাবেত হবেন। এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে একত্রিত হয়ে তাদের নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র নেতৃত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

এই আওয়ামী লীগ নেতার মতে, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল এবং স্বার্থক করতে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এক লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে যে টার্গেট নিয়েছে তা বাস্তবায়ন এখন সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা। তার দাবিÑ সার্বিক প্রস্তুতিতে আলামত পাওয়া যাচ্ছেÑ তাতে লোকের সংখ্যা টার্গেটের অপেক্ষা কয়েকগুণ বেশিও হতে পারে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের এই প্রস্তুতির মধ্যে পদ্মাসেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতামূলক কর্মকান্ড রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন। বিশেষ করে মাঠপুলিশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেভাজনদের তল্লাশি করাসহ আবাসিক হোটেলগুলোতে কড়া নজর দিচ্ছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) প্রলয় সিচিম নিশ্চিত করেন- পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে বা পরে কোনো মহল বা গোষ্ঠী যাতে অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিতে না পারে সেলক্ষে মাঠপুলিশকে বিশেষ দিকনিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। এবং আওতাধীন চার থানা পুলিশের ইনচার্জদের নিয়ে বৈঠক করে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। সপ্তাহখানেক ধরে নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি।’

8 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন