২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধন ও তদন্তে দুই কমিটি

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:৩৮ অপরাহ্ণ, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধন ও তদন্তে দুই কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: নতুন শিক্ষাক্রমে ছাপানো পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন এবং কেন ভুল হল তা তদন্তে দুটি কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, একটি কমিটি হবে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে, যারা পাঠ্যবই সংশোধনে কাজ করবেন।

কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেছে কিনা তা  তদন্তে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবইয়ের ভুল-ভ্রান্তি, তথ্য বিকৃতি, সংশোধনী এবং এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নানা মাধ্যম থেকে পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে আলোচনা শোনা যাচ্ছে। গণমাধ্যম, রাজনীতির মাঠ, আজকাল সামাজিক মাধ্যম অনেক সরব, সব জায়গা থেকেই আমরা বইয়ের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।

আমরা আগেও বলেছি, আমাদের এই বইগুলো নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষামূলকভাবে আমরা প্রণয়ন করেছি। তিনি বলেন, বইগুলোকে ঘিরে যে ভুল ধরা পড়ছে তা নিয়ে আমরা দুটি কমিটি করছি।

একটি আমাদের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে, শুধু বিষয় বিশেষজ্ঞ না, ধর্ম, স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য এমন নানা বিষয়ে যে বিশেষজ্ঞরা আছেন তাদের নিয়ে আমরা একটা কমিটি করছি।

আমরা একটা লিংক দিয়ে দেব, দেশ বিদেশ থেকে আমাদের এই বই নিয়ে যে কোনো মতামত আমাদের জানালে এই কমিটির মাধ্যমে কোথাও কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হয়ত সর্ষের মধ্যেও কোথাও ভূত আছে। এনসিটিবির ভিতরেও যদি কেউ থেকে থাকে যে কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলগুলো করেছে। বই ছাপানোর বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে ভুল করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

কোথাও কারো গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক কোনো দিকে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে থাকলে তা খুঁজে বের করতে আমরা আরেকটি কমিটি করে দিচ্ছি।দ্বিতীয় কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্য মন্ত্রণালয়, এমনকি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকেও সদস্য থাকতে পারে বলে জানান তিনি।দীপু মনি বলেন, সারা বিশ্ব এখন রূপান্তরের কথা বলছে। আমরা এই রূপান্তরের সাথে যুক্ত আছি।

কিছুদিন আগে জাতিসংঘের আমন্ত্রণে আমি রূপান্তরমূলক শিক্ষার একটি আয়োজনে গেছি। সে অনুযায়ী শিক্ষাব্যবস্থায় রূপান্তরের অংশ হিসেবেই আমরা নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করেছি।

বইয়ের মধ্যে ধর্মীয় ও অন্যান্য নানা বিষয় নিয়েও মন্ত্রণালয়ের অবস্থান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বইগুলো প্রণয়নের সাথে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা বইয়ের কোথাও যেন ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, পেশা, লিঙ্গ বিদ্বেষ-বৈষম্য না থাকে তার জন্য সতর্কতা অবলম্বনের চেষ্টা করেছি।

আওয়ামী লীগ কখনোই ধর্মবিরোধী বা বিদ্বেষী কিছু কখনো করেনি। কাজেই অনেক অভিযোগ আসতে পারে, অভিযোগের সত্যতা থাকলে তা সংশোধন করা হবে।সারাদেশে ২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করা হয়েছে।

তা শিক্ষার্থীদের হাতেও পৌঁছে গেছে এ মাসের শুরুতে। নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে বিভিন্ন ভুল ও পরিবর্তন নিয়ে সমালোচনা চলছে নানা পর্যায়ে। এসব নিছকই ভুল, না উদ্দেশ্যমূলক, সে প্রশ্নও উঠেছে।

সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে হুবহু অনুবাদ করে তুলে দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য বলে স্বীকার করে নিয়েছেন বইটি রচনা ও সম্পাদনায় যুক্ত থাকা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান।

নবম ও দশম শ্রেণির জন্য ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রকাশিত তিন বিষয়ের পাঠ্যবইয়ে মোট নয়টি ভুল চিহ্নিত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এজন্য দেওয়া হয়েছে সংশোধনী।

নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যপুস্তক প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমার বাচ্চাদের সাথে কথা হয়, তাদের মায়েরা-বাবারা বলছে, শিশুরা আগ্রহের সাথে শিখছে, তারা স্কুলে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রমটিও তাদের ভাল লেগেছে।

এটি যেমন সত্য, তেমনি বইয়ে কোনো ভুল থাকলে সেটিও সত্য। কোথাও ভুল থাকলে পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধনের সুযোগ থাকবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদানের ব্যাপারে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছ এবং তা চলমান আছে বলে তিনি জানান।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন