১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পুরী এখন ধ্বংসপুরী, মোবাইল টাওয়ারগুলো মুচড়ে ভাঙল ফনি !

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, ০৪ মে ২০১৯

দু’দশক আগের সুপার সাইক্লোন যেন ফিরে এলো আবার। এই সাইক্লোনের নাম ফণী, যার গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার। এই সাইক্লোনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের পুরী। পুরীর পরিস্থিতি ভয়াবহ। এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা প্রশাসনও নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি। কারণ,পুরী এখন ধ্বংসপুরী। আর মোবাইল টাওয়ারগুলো দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে গেছে ফণীর আঘাতে। মোবাইল বা ল্যান্ডলাইনের সংযোগ সম্পূর্ণ বিকল হয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে পুরী ।

বৃহস্পতিবার থেকেই পুরীতে রাস্তাঘাট ফাঁকা। যারা থেকে গিয়েছিলেন নিজেদের হোটেল বা ঘরে বন্দি হয়ে, তারা দেখলেন প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা তাণ্ডবলীলা। একের পরে এক বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়া, যাবতীয় কাঠ-বাঁশের কাঠামো ভেঙে মাটিতে গুঁড়িয়ে যাওয়া, প্রায় খেলনা ঘরের মতো চেয়ার-টেবিল-চৌকি বাতাসে ভাসতে-ভাসতে বহু দূরে উড়ে যাওয়া, কাচের যাবতীয় দরজা-জানালা ভেঙে চুরমার হওয়া—কিছুই বাদ গে‌ল না।

মোবাইলের টাওয়ারগুলো যেন কেউ খেলনার মতো ভেঙে দিয়েছে রাস্তাঘাটে। ইটের বড় চাঙড় উড়ে এসে পড়েছে গাড়িতে। সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ। পুরীর হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন চঞ্চল সেন। মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই। বাড়িতে জানাতেও পারেননি ঠিক আছেন কি না।

তিনি বলেন, বাড়িতে সকলে খুব চিন্তা করছে জানি! কিন্তু কী করে খবর দেব? এ রকম ঝড়ই তো কোনও দিন দেখিনি।

পুরীর বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য এমনটাই। ১৯৯৯ সালে সুপার সাইক্লোন দেখার ইতিহাস রয়েছে পুরীর। তারপরেও একাধিক ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। কিন্তু ফণীর মতো এমন উদাহরণ নেই।

শিকাগোর বাসিন্দা টিনা হাজরা চৌধুরী পুরীতে এসেছিলেন মায়ের সঙ্গে পুজো দিতে। তিনি এখন ঝড়ে আটকে পড়েছেন।

টিনা বলেন, সরাসরি ঝড়ের মধ্যে পড়ার কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। এবারই প্রথম হলো।

ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে বাতাস যেভাবে বেগবান হয়েছিল, সেই বেগই ক্রমশ বেড়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বাতাস-বৃষ্টির দাপটের মধ্যেই হাতে গোনা লোকজন তখনও রাস্তায়, গাড়িও যাতায়াত করতে দেখা গেছে। কিন্তু পৌনে আটটা থেকে পুরো ছবিটাই পাল্টে যেতে থাকল। ঠিক আটটা নাগাদ চারদিক লন্ডভন্ড করে দিয়ে পুরো শক্তি নিয়ে পুরীতে আছড়ে পড়েছে ফণী। তখন চার দিকে শুধু বৃষ্টি-বালির ঝড়। তিন ফুট দূরত্বেও ঠিকঠাক দেখা যাচ্ছে না, কী হচ্ছে।

খড়কুটোর মতো সব কিছু তখন এদিক-ওদিক হাওয়ায় ভাসছে। উড়ন্ত সব জিনিসকে যেন কোনও অদৃশ্য হাত এখান থেকে ওখানে নিয়ে যাচ্ছে ইচ্ছেমতো। উত্তাল সমুদ্র এসে তটের অস্থায়ী দোকানগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আর নিজেদের সম্বল বাঁচানোর জন্য তার পিছনে পিছনে দৌড়াচ্ছেন দোকানদারেরা।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন