২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

প্রার্থী না হওয়ার কারণ জানালেন বিএনপি নেতা আলাল

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:১৩ অপরাহ্ণ, ০১ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রার্থী না হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, যে আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন সে ব্যাপারে দল থেকে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। তাঁর এবং অন্য আরও কয়েক নেতার ভোট না করায় দলে কোনো প্রভাব পড়বে না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তিন হাজার নেতাও যদি বিএনপি থেকে চলে যায় তাতে দলের কিছু হবে না। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হলেন সূর্যের আলো। সূর্যের কাছে আমরা চন্দ্র কোনো বিষয় না।’

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমি যেখানে মনোনয়ন চেয়েছি সেখানে কী করা হয়েছে, দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। আবার যে জায়গায় আমি নমিনেশন (মনোনয়ন) পেয়েছি সেখানে দল কেন আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল তাও জানায়নি।’

এর আগে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে সংসদ নির্বাচন করেন। এবার তিনি বরিশাল-৫ আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। এ আসনে বিএনপি নেতা মজিবর রহমান সরোয়ারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মোয়াজ্জেম হোসেনকে দেওয়া হয় বরিশাল-২ আসন। গত ২৬ নভেম্বর ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। মোয়াজ্জেম হোসেন শেষ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

মোয়াজ্জেম হোসেনের মতো বিএনপির আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেলও মনোনয়নপত্র জমা দেননি। যিনি এখন কারাগারে আছেন। সোহেল নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন ঢাকা-৮ আসন থেকে। দল থেকে তাঁকে ঢাকা-৯ আসনে মনোনয়ন দেয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আওয়াল মিন্টুকেও দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও তিনি আর মনোনয়নপত্র জমা দেননি। আবদুল আওয়াল মিন্টুকে ফেনী-৩ আসন থেকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি।

নির্বাচনের কাজে থাকবেন আলাল

এক যুগ ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপির দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। ১৫ নভেম্বর আলাল প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তিনি বরিশাল সদর আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হতে চান। দল থেকে সেখানে মনোনয়ন না পেয়ে শেষমেশ আর প্রার্থীই হলেন না। অবশ্য নির্বাচন না করার ব্যাপারে মোয়াজ্জেম হোসেন অন্য কথা বলছেন।
প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আলাল বলেন, ‘যে সংসদ নির্বাচনে আমার নেত্রী খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন না, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আমি নৈতিকতার দিক থেকে সঠিক মনে করি না। সে জন্য শেষ সময়ে আমি মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

নির্বাচনে প্রাথী না থাকার ব্যাপারে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমরা তিনজন কেন, এমন আলোচিত তিন হাজার নেতাও যদি বিএনপি থেকে চলে যায় বা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যায়, তাতে দলের মূল সিদ্ধান্ত কখনো বাধাগ্রস্ত হবে না। সেটা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রমাণ করেছেন। খালেদা জিয়া হলেন সূর্যের আলো। সূর্যের কাছে আমরা চন্দ্র কোনো বিষয় না। এটা নগণ্য ব্যাপার। আমাদের বিষয়টি খুবই তুচ্ছ ব্যাপার দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের কাছে। এটা নিয়ে বিএনপির মূল সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে সেটা আমি মনে করি না।’

বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনে থাকার জন্য বিএনপি এত কিছু করেছে। তানা হলে বিএনপির এত কাঠখড় পোহাতে হতো না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো ঘোষণা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করতে পারত। সেটা হয়নি। বিএনপি শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে থাকবে।’

প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বিএনপি যোগ্য প্রার্থী দিতে পেরেছে কি না সে মূল্যায়ন করার সময় এখনো আসেনি। আমি মনে করি দল সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ফেসবুকে দেখেছি, বিতর্কিত এমপি আবদুর রহমান বদিকে মনোনয়ন না দিয়ে তার স্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। একজন মজা করে লিখেছেন, বদির বদলে বধূ, লাউয়ের বদলে কদু। এমন যদি হয় সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে সেই সংজ্ঞা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’

নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও দলের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন বলে জানান মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘দলীয় নির্বাচনে কর্মকাণ্ডের বিশাল যে পরিধি রয়েছে সেই পরিবিধির মধ্য থেকে আমি নির্বাচনের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করব। সেখানে প্রার্থী হয়ে করতে হবে এমন কোনো বিষয় নেই।’

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন