১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

প্লাস্টিক স্টিলেই বেশি বাঁচে ‘করোনা’

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ, ১৯ মার্চ ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন :: বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করা নভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে গবেষণায় প্রতিদিনই গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা, যা ভাইরাসটি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজের (এনআইএআইডি) চিকিৎসকরা এক নতুন গবেষণায় জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস বাতাসে মাত্র কয়েক ঘণ্টা ভেসে থাকতে পারে।

তবে প্লাস্টিক কিংবা স্টেইনলেস স্টিলের গায়ে ভাইরাসটি কয়েক দিন পর্যন্ত টিকে থেকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনটি গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের ওয়েবসাইটে।

এনআইএআইডির গবেষকরা জানিয়েছেন, কোনো বস্তুতে ভাইরাসটি কতক্ষণ বাঁচে তা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই তারা এসব তথ্য জানতে পেরেছেন। এর জন্য তারা বাড়ি বা হাসপাতালে কাশি বা অন্য কোনো বস্তুর সংস্পর্শের মাধ্যমে নিত্যব্যবহার্য কোনো কিছুতে সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরে থাকা ভাইরাস প্রতিস্থাপন করে অনুসন্ধান করেছেন।

এ ক্ষেত্রে ভাইরাসটির নকল তৈরিতে কাশি বা হাঁচির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তরল ফোঁটায় যন্ত্রের সাহায্যে তারা অ্যারোসল ছিটিয়ে দিয়েছিলেন। পরে দেখা গেছে, অ্যারোসলের ফোঁটায় ভাইরাসটির অর্ধেক অকার্যকর হতে ৬৬ মিনিট সময় লেগেছে। আরও এক ঘণ্টা ছয় মিনিট পর ভাইরাসটির মাত্র তিন-চতুর্থাংশ অকার্যকর হয়। তবে কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘণ্টা পর ভাইরাসটিকে কার্যকর পাওয়া যায়নি। আর তামার মধ্যে করোনা অকার্যকর হতে ৪ ঘণ্টা লেগেছে।

গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা এনআইএআইডির রকি মাউন্টেইন ল্যাবরেটরির নিলটজ ভ্যান ডোরেমালেনের মতে, তৃতীয় ঘণ্টার পর বাতাসে কার্যকর ভাইরাসের পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ১২ শতাংশ। আর স্টেইনলেস স্টিলে ভাইরাসটির অর্ধেক কার্যকারিতা হারাতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট এবং প্লাস্টিকে লেগেছে ৬ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট। ভাইরাসটির সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত জীবন পাওয়া গেছে তামায়, যেখানে ৪৬ মিনিটের মধ্যেই ভাইরাসটি অর্ধেক অকার্যকর হয়ে যায়।

এর আগে গত ১০ মার্চ চীনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, নতুন করোনা ভাইরাস বাতাসে ৩০ মিনিট ভেসে থাকতে পারে।

এদিকে কোন টাইপ রক্তের মানুষ এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তা নিয়েও গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। মেইল অনলাইনের খবরে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের উৎসভূমি হিসেবে চিহ্নিত চীনের হুবেইপ্রদেশের উহান শহরে দেশটির একদল বিজ্ঞানী গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, ‘এ’ টাইপ রক্তের মানুষই কোভিড-১৯ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। বিপরীতে তুলনামূলকভাবে কম আক্রান্ত হচ্ছেন ‘ও’ টাইপ রক্তের মানুষ।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, উহানে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২৫ শতাংশ ‘ও’ টাইপ রক্তের মানুষ ছিলেন। বিপরীতে ‘এ’ টাইপ রক্তের আক্রান্ত মানুষ ছিলেন ৪১ শতাংশ। এমনকি মৃতদের মধ্যেও ‘এ’ টাইপ রক্তের মানুষ বেশি।

মানুষের রক্তের গ্রুপ সাধারণত নির্ণয় করা হয় ‘এ’ ‘বি’ ‘ও’ সিস্টেমে। এর মধ্যে ‘এ (৩২ শতাংশ)’ গ্রুপের চেয়ে ‘ও (৩৪ শতাংশ)’ গ্রুপের রক্তের মানুষের সংখ্যাই বেশি। বিজ্ঞানীরা জানান, উহানে মোট ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৩৪ শতাংশ মানুষের রক্তের গ্রুপ ‘এ’। তারা শহরটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও অনাক্রান্ত উভয় শ্রেণির মানুষের রক্তই পরীক্ষা করেছেন।

দেখা গেছে, মারা যাওয়া ২০৬ জন রোগীর মধ্যে ৮৫ জনই ছিলেন ‘এ’ গ্রুপের রক্তের। আবার আক্রান্তদের মধ্যে ২৬ শতাংশের রক্তের গ্রুপ ছিল ‘ও’ এবং ৩৮ শতাংশের রক্তের গ্রুপ ‘এ’।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন