২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ববিতে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চার কর্মকর্তার যোগদান নিয়ে হযবরল

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৩৫ অপরাহ্ণ, ০১ জুন ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এসএম ইমামুল হকের সভাপতিত্বে ঢাকাস্থ লিঁয়াজো অফিসে সোমবার অনুষ্ঠিত হওয়া সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তার পদন্নোতি পুনর্বহাল রাখা হলেও এই বিষয়ে কিছু জানেননা বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি ড. এ কে এম মাহাবুব হাসান। তিনি বলেছেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় কি সিদ্ধান্ত হয়েছে বা না হয়েছে সেই বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আর ওই চার কর্মকর্তার যোগদান পত্র না নেয়ার বিষয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া শেষ সিন্ডিকেট সভায় তাদের পদোন্নতি বহাল রাখা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। যদি বহাল রাখা হয় তাহলে তারা যোগদান পত্র দাখিল করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়মানুযায়ী কাজ করবে।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এসএম ইমামুল হক ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে চার কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সব নিয়ম মেনেই পদোন্নতি পেলেও এই চার কর্মকর্তাকে যোগদানে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসির বিরুদ্ধে। এছাড়া যোগদান না নেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত ভিসির বিরুদ্ধে মামলারও হুঁশিয়ারী দিয়েছেন এই কর্মকর্তারা।

জানা গেছে- শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ছুটিতে চলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম ইমামুল হক। ছুটিতে থাকাকালীন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমানকে একই শাখার উপ-পরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব, একই শাখার উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবীরকে পরিচালক পদে চলতি দায়িত্ব, অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার বাহাদুরকে একই শাখার পরিচালক পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীনকে ডেপুটি চিফ প্রকৌশলী পদে চলতি দায়িত্ব প্রদানের মর্মে নিয়োগপত্র দেন। এক কথায় তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়। পদোন্নতিপত্র পেয়ে এই ৪ জনই ভিসি ছুটিতে থাকাকালীন গত ১২ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর যোগদানপত্র দাখিল করেন। এরপর দীর্ঘ যাচাই বাছাই শেষে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা ভঙ্গসহ একাধিক নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে ওই ৪ কর্মকর্তার যোগদানপত্র গ্রহণ ও কার্যকর করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত ২৩ মে সহকারি রেজিষ্ট্রার সোলাইমান খান স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত স্মারক স্ব-স্ব কর্মকর্তার নিকট পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার উপ-পরিচালক থেকে পরিচালক পদের চলতি দায়িত্ব পদে পদোন্নতি পাওয়া হুমায়ন কবির জানান, আমরা পদোন্নতি পাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত ভিসি মহোদয়ের কাছে যোগদান পত্র দিয়েছি, কিন্তু তা তিনি গ্রহণ করেননি। সে আমাদের একটা আইন দেখিয়েছে। তার চোখে হয়তো এখানে আইনের ব্যপ্তয় ঘটেছে। কিন্তু আসলে এখানে কোনো আইনের ব্যপ্তয় ঘটেনি। আমরা আইন মেনেই সব কাজ করেছি, আর আমাদের পদোন্নতি তো কর্তৃপক্ষই দিয়েছে।
অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক থেকে পরিচালক পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পদে পদোন্নতি পাওয়া সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই পর্যন্ত আমি শুধু কাজ করে আসছি। এই পদেই টানা ৭ বছর কাজ করেছি। প্রমোশন পাওয়া বা না পাওয়া নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই, সেটা কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। যোগদান পত্র নেয়নি কর্তৃপক্ষ সেটা কর্তৃপক্ষের বিষয় এবং পরবর্তীতে আমি কি করব সেই বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান এই কর্মকর্তা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে ডেপুটি চিফ প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পাওয়া মুরশীদ আবেদীন বলেন, অফিসের কিছু কুচক্রী মহলের বাঁধার কারণে ভারপ্রাপ্ত ভিসি আমাদের যোগদান পত্র গ্রহণ করছে না। আর আমাদের যোগদান পত্র না নেওয়ার যে ব্যাখা উনি দিয়েছেন সেটা সঠিক নয়। এই বিষয়ে মামলা করব। আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা ন্যায় পাবো। এছাড়া রুটিন দায়িত্বে থেকে ভারপ্রাপ্ত ভিসি এই কাজ করতে পারেন না। তিনি স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে সত্যিই এক ধরণের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কাগজ পত্র হাতে না পেয়ে নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। সিন্ডিকেট সভায় কি হয়েছে বা না হয়েছে সেই বিষয়েও এখন পর্যন্ত আমরা কিছু নিশ্চিত হতে পারিনি। রেজুলেশন হাতে পেলে সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

 

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন