২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরগুনায় ঘুমন্ত বৃদ্ধাকে পুড়িয়ে হত্যা, সাবেক মেম্বরপুত্র পুলিশ হেফাজতে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৩২ অপরাহ্ণ, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বরগুনার আমতলীতে ঘুমন্ত অবস্থায় এক বৃদ্ধাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার নাম মনোয়ারা বেগম (৬৫)। উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে শুক্রবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে শাখাওয়াত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের বিধবা মনোয়ারা বেগম একটি খরের ঘরে একা বসবাস করতেন। তিনি এলাকায় ঝিয়ের কাজ করে দিনাতিপাত করতেন। শুক্রবার রাতে ছোট ভাই আবদুর রাজ্জাক খাঁনের পার্শ্ববর্তী বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন বৃদ্ধা। গভীর রাতে ওই ঘরে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মনোয়ারা বেগম ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যান।

শনিবার ভোররাতে ভাই আবদুর রাজ্জাক খাঁন বৃদ্ধা বোনের খোঁজখবর নিতে যান। বোনের ঘর পোড়া দেখে ডাক চিৎকার দেন। তার ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে পুড়ে ছাই হওয়া ঘরে মনোয়ারা দগ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত মনোয়ারা বেগমের মেয়ে এলিজা বেগম বাদী হয়ে আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নুর মোহাম্মদ মুন্সি, আবদুল মান্নান, হারুন শরীফ ও সাফিয়া বেগম বলেন, ডাকচিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ওই ঘরের মাঝখানে মনোয়ারার পোড়া দেহ পড়ে আছে। তার দেহ থেকে মাংস খসে পড়ছে। ওই ঘরে থাকা ধান-চাল, আসবাবপত্র ও তিনটি ছাগল পুড়ে গেছে।

প্রতিবেশী ফাইজুন নাহার নিপা বরিশালটাইমসেকে জানান, মনোয়ারার ভাই আবদুর রাজ্জাকের ডাকচিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ঘরের সবকিছু পুড়ে গেছে। আর মনোয়ারার পোড়া দেহ ঘরের পাশে পড়ে আছে।

নিহত মনোয়ারার ছোট ভাই আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বরিশালটাইমসকে বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমার সৎমামা সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন হাওলাদারের সঙ্গে ৫ একর জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মামা ওই জমির জন্য আমাকে ও আমার নিহত বোনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় আমার বোন ছিল দুই নম্বর আসামি। আমার বোনকে মামা সামসুদ্দিন হাওলাদার ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমিও তার ভয়ে আতঙ্কিত। যে কোনো সময় আমাকেও হত্যা করতে পারে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

মামলার বাদী নিহতের মেয়ে এজিলা বেগম বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘মোর মায়রে য্যারা এই রোহোম পুইড়্যা মারছে মুই হ্যাগো বিচার চাই। মোরা গরিব মানু, মোগো কী বাঁচার অধিকার নাই। মোর মায়রে হ্যার মামু সামসু মেম্বার মানু দিয়া পোড়াইয়্যা মারছে। মুই এইয়্যার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য সামসুদ্দিন হাওলাদার বলেন- এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি নির্দোষ।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম বাদল বরিশালটাইমসকে বলেন- লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন