২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

বরগুনায় মেয়র প্রার্থীর স্ত্রীর ওপর ‘ডিম হামলা’

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪২ অপরাহ্ণ, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও বরগুনা:: বরগুনা সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র শাহাদাত হোসেনের পক্ষে প্রচার চালানোর সময় ডিম হামলার শিকার হয়েছেন তার স্ত্রী ও দুই নারী সমর্থক। বরগুনা শহরের প্রেসক্লাব গলিতে রোববার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী হেনারা বেগম, ইভা মনি (২০) ও তামান্না লাবনী (২৪) নামের তিনজন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর স্ত্রী হেনারা বেগমসহ কয়েকজন নারী লিফলেট বিতরণ করছিলেন। হঠাৎ এক যুবক খাঁচাভর্তি ডিম নিয়ে এসে তাদের লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকে। এ সময় প্রচারে থাকা দুই তরুণী ওই যুবকের গেঞ্জি ধরে আটকাতে চেষ্টা করলে ডিমের খাঁচা দিয়ে তাদের পিটিয়ে পালিয়ে যায়।

হামলার শিকার হেনারা বেগম বরিশালটাইমসকে জানান, তার স্বামী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের পক্ষে প্রচার চালানোর জন্য সকালে বরগুনা পৌরসুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়েছিলেন। সঙ্গে তার বোনের দুই মেয়েসহ বেশ কয়েকজন নারী সমর্থক ছিলেন।

প্রেসক্লাব গলিতে মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা এক যুবক তাদের ওপর ডিম ছুড়তে থাকে। পরে সেই ডিমের খাঁচা দিয়ে আঘাত করে তাদের। একপর্যায়ে সেখানে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি যুবায়ের আদনান অনিক ও তানভীর হোসাইন উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরে খবর পেয়ে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, সদর থানার ওসি তারিকুল ইসলাম, পরিদর্শক শহিদুল ইসলামসহ পুলিশ কর্মকর্তা ঘটাস্থলে ছুটে আসেন।
তিনি আরও জানান, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুর ইন্ধনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজের সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি যুবায়ের আদনান অনিক বরিশালটাইমসকে বলেন, ঘটনাস্থল দিয়ে যাওয়ার সময় জটলা দেখতে পাই। পরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি, মেয়রের স্ত্রীসহ অন্যদের ওপর ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের কেউ ডিম ছুড়েছে। প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে পুলিশকে খবর দিই।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বরিশালটাইমসকে বলেন, আমি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর টার্গেট। প্রচারের শুরু থেকেই হামলার ভয়ে বাসায় অবরুদ্ধ থাকি। আমার পরিবারেরও নিরাপত্তা নেই। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াটাই আমার অপরাধ।
অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ সভাপতি সাহাবুদ্দিন সাবু বরিশালটাইমসকে বলেন, আমি শুনেছি মেয়র থাকাকালে শাহাদাতের দুর্নীতির শিকার ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা তার পক্ষে যারা প্রচারে গিয়েছিল, তাদের ডিম ছুড়ে লাঞ্ছিত করেছে। ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তিনি বরাবরই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করে আসছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ বরিশালটাইমসকে বলেন, শাহাদাত হোসেন দলের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তিনি পৌরমার্কেটকে কুক্ষিগত করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন। ব্যবসায়ীরা তার দুর্নীতির কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে জগ প্রতীকের প্রচার চালানোরদের লাঞ্ছিত করে থাকতে পারে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ বা আমার সমর্থকদের কেউ জড়িত নয়। নিবর্চানে শাহাদাত হোসেন কালো টাকা ঢেলে দিয়েছেন। এর ফলে নির্বাচন প্রভাবিত হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।
বরগুনা সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার মফিজুর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান, ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রত্যেক প্রার্থী যেন নিরাপদে প্রচার চালাতে পারেন সে জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন পুলিশ তা নিয়েছে। বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন