১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশালের (বাসদ) নেত্রী ডা. মনিষার বিরুদ্ধে বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও জমি দখলে থানায় অভিযোগ 

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:২৭ অপরাহ্ণ, ০৮ জুন ২০২৩

বরিশালের (বাসদ) নেত্রী ডা. মনিষার বিরুদ্ধে বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও জমি দখলে থানায় অভিযোগ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ বরিশাল: বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তার নিজ গ্রামের বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে মানিক গাজীর বাড়িতে বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।

গত কাল ৭ জুন দুপুর ১২ টায় মনিষা চক্রবর্তী শ্যামপুর গ্রামের মানিক গাজীর বাড়িতে শতাধিক ভাড়াটে লোকজন ও ৭ টি পিকআপ ভ্যান ও একটি মাইক্রোবাস নিয়ে এসে জামাল গাজী,শহিদ গাজী, সুজন গাজীর তিনটি কাঠের বসত ঘর ও মজিবর গাজীর একটি বিল্ডিং এর পাকা ঘর ভাঙচুর চালায়।

এই ঘটনায় আজ ৮ জুন (বৃহস্পতিবার) মজিবর গাজীর স্ত্রী সেফালী বেগম বাকেরগঞ্জ থানায় দুপুর ১.৩০ মিনিটে মনিষা চক্রবর্তীকে ১ নং আসামি ও রাজিব সরদারকে ২ নং ও  মুয়াজ্জেম হোসেনকে ৩ নং আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়াও ৮০/৯০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এই অভিযোগটি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মজিবর গাজীর স্ত্রী সেফালি বেগম জানান, বাড়িতে পুরুষ লোক না থাকায় মনিষা চক্রবর্তী ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে মহিলাদের মারধর করে বাড়ি থেক তাড়িয়ে দেয়। এ সময় তারা বসতবাড়ি ভাঙচুর লুটপাট চালায় ও আমাদের বসত ঘরে থাকা নগদ টাকা পয়সা সহ মালামাল লুটপাট করে নেয়।

মনীষা চক্রবর্তীর সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আমরা মনীষা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলাও করেছি। কিন্তু সে আইনকানুন মানছে না। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আমাদের বাড়িঘর সম্পত্তি তার পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে বাড়িঘর থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে সব দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে আমরা থানা পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। মনীষা চক্রবর্তী আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। এখন আমাদের বাড়িঘর ভেঙেচুরে নিয়ে গেছে। আমাদের বাড়িতে তিনটি পরিবারের প্রায় ২০ জন মানুষ পথে বসেছি। আমাদের মাথা গোজার ঠাইটুকু কেরে নিয়েছে।

এ বিষয়ে মনীষা চক্রবর্তী জানান, এই সম্পত্তির সকল কাগজপত্র আমার পিতার নামে। আমি কাগজপত্র ছাড়া এই জমিতে আসেনি। এবং এই বাড়ি ঘর আমার পূর্বপুরুষদের। গাজী পরিবারের লোকজনকে আমরাই থাকতে দিয়েছি। জমি নিয়ে তাদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।

তারা আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও করেছে। আদালত মামলা খারিজ করে দিয়েছে। কিছুদিন আগে মজিবর গাজী আমার মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে লাখ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমি আদালতে  মামলা করেছি। আজ আমার বাবার জমিতে থাকা আমাদের ঘর ভেঙ্গে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সুধীর কুমার স্মৃতি পাঠাগার ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেছি। কাজ শুরু করলে গাজীরা আমার উপর হামলার চেষ্টা চালায়। আমার সাথে থাকা লোকজন প্রতিবাদ করলে তারা সরে যায়।

এ বিষয়ে স্থানিয় ইউপি সদস্য মো: মেহেদী হাসান  শামিম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পূর্বপুরুষের আমল থেকে শুনে আসছি ঐটা গাজী বাড়ি। মনিষা চক্রবর্তী একজন সম্মানিত লোক তাদের নাকি গাজী বাড়িতে ২২ শতাংশ জমি রয়েছে। সেটা থাকতেই পারে তবে বারবার বহিরাগত লোকজন এলাকায় নিয়ে এসে বাড়িঘর ভাঙচুর করে এটা আমার দৃষ্টি গোছড় হলে প্রশাসনকে জানিয়েছি ও ইউনিয়নের অভিভাবক চেয়ারম্যান কে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদার জানান, মনীষা চক্রবর্তী বহিরাগত শতাধিক লোকজন ও ৫ টি ট্রাক ভাড়া করে নিয়ে এসে অন্যের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে এমন খবর পেয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি কে জানিয়েছি। এসপি স্যার কে জানিয়েছি।  বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সরাসরি প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকে দোষারোপ করা হবে। তখন আবার বলবে সংখ্যালঘুর উপর হামলা হয়েছে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব যাদের তাদের জানানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও তারা চলে যাওয়ার পরে আবারও ভাঙচুর করা হয়েছে এজন্য পুলিশের অবহেলা তারা মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারে না।

এখন যাহারা বাড়ি ঘর হারিয়েছে তারা থানায় গিয়ে থাকবেন। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি এস এম মাকসুদুুর রহমান জানান, বাড়ি ঘর ভাঙচুর ঘটনা স্থানে গতকাল পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আজ দুপুরে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন