২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশালের সেই টাউট এমরানের জামিন মেলেনি, জেলহাজতে প্রেরণ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২০ অপরাহ্ণ, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক:: বরিশালের সেই দুরন্ধর মাওলানা মো. এমরানুল হক ওরফে দুরন্ধর ইমরানের জামিন মেলেনি। রোববার বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ইমরানকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আসামি ইমরানের পক্ষে তার জামিন আবেদন করেন এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

উল্লেখ্য বহুমুখী অপকর্মের হোতা ইমরানুল হককে ওরফে ইমরানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মিথ্যে মামলা দায়ের করে নিকটাত্মীয়কে হয়রানির প্রেক্ষাপটে বরিশাল কোতয়ালি পুলিশ গত ১২ অক্টোবর তাকে আটক করে। বরিশাল জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাজ্জাদুল হক সাজুর ঢাকার আদালতে দায়েরকৃত মামলার পলাতক আসামি কথিত মাওলানা এমরানকে রোববার দুপুরে নগরীর সাগরদী এলাকা থেকে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে খুঁজে পায়। একাধিক মামলার আসামি যুবক এমরানের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষকে হয়রানিমূলক দৌঁড়ের ওপর রাখার কৌশল হিসেবে দেশের বিভিন্ন আদালতে মিথ্যে মামলা দায়ের করার অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ঢাকার আদালতে তার এধরণের একটি মিথ্যে মামলার বিষয় পুলিশ নিশ্চিত হয়। নারী নির্যাতনমূলক ওই মামলায় সাজুকে প্রধান আসামি করতে একজন নারীকে বাদী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিলো। মামলায় রুণা নামক এক তরুণী নিজেকে সাজুর স্ত্রী হিসেবে দাবি করে হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলো। ঢাকার সিএমএম আদালতের সেই মামলায় কৌশলে ওয়ারেন্ট জারি করে বরিশাল কোতয়ালি পুলিশকে বোকা বানিয়ে সাজুকে আটক করা হয়েছিলো। গত ৪এপ্রিল বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাজু আটক হওয়ার পর অনুসন্ধানে পুলিশ নিশ্চিত হয় ওই মামলাটি ছিলো ভূয়া। পরে সাজুর পরিবার ঢাকার আদালতে এবিষয়ের সত্যতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে সশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক তাকে জামিনে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি মামলাটি আমলে নিয়ে এর নেপথ্যের বিষয় জানার তাগিদ দেয়। পরে আদালত নিশ্চিত হয় মামলায় উল্লেখিত ঠিকানায় কেরানীগঞ্জের আরশিনগরের বাসিন্দা রুণা নামক কোনো তরুণীর অস্তিত্ব নেই। মূলত সাজুকে ফাঁসাতেই ঢাকার মোহাম্মদপুরে লালমাটিয়া এলাকার নিকাহ্ রেজিস্টার তথা কাজী মো. গোলাম কিবরিয়াকে ম্যানেজ করে একটি কাবিননামা তৈরি করে কথিত রুণাকে স্ত্রী হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে আদালতের একজন আইনজীবীর সহায়তাও নেয়া হয়েছিলো। এনিয়ে ঢাকা ও বরিশাল মিডিয়ায় তোলপাড় করা বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ঘটনার নেপথ্যের ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়।

বিভিন্ন সূত্র মিডিয়াকে নিশ্চিত করে যে, ব্যবসায়ী বিরোধ থেকে জমজম হাসপাতালের নাম দখলে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় আত্মীয় এমরানুল হক একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে সাজ্জাদুল হক সাজুর পরিবারকে হয়রানি করে আসছে। পাশাপাশি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সাজু ও তার পিতার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়ে বিতর্কীত করার চেষ্টা করা হচ্ছিলো। সর্বশেষ ঢাকার আদালতে হয়রানিমূলক এই মিথ্যে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে চাঞ্চল্যকরভাবে অদৃশ্য এক নারীকে বাদী হিসেবে উপস্থাপনে কৌশল নেয়া হয়। খানিকটা তোলপাড় হওয়া এই মিথ্যে মামলা নিয়ে আদালত বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। আদালতের ভূমিকায় বেরিয়ে আসে এই মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে বরিশালের মাওলানা মো. এমরানুল হকের ভূমিকা রয়েছে।

একপর্যায়ে আদালতে ওই মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ক্ষমা প্রার্থনা করে মামলাটি যে ভূয়া তা প্রমাণ করে। অতঃপর গত ৬ জুন সাজুকে অত্র মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার পাশাপাশি তা খারিজ করে দেন। পক্ষান্তরে ভুয়া মামলা দায়েরের জন্য সাজ্জাদুল হক সাজু ৭ জুলাই ইমরানুল হক ও সেই কাজী গোলাম কিবরিয়াসহ কথিত বাদী রুণাকে আসামি করে ঢাকার একই আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি দায়েরে পর থেকে এমরান জামিনের চেষ্টা করছিলো। ইতোমধ্যে কয়েক দফা কর্মদিবসে আদালতে ইমরানসহ অন্য আসামিরা অনুপস্থিত থাকে। ফলে ওয়ারেন্ট বরিশাল কোতয়ালি পুলিশের হাতে চলে আসার পর এসআই আসাদুজ্জামান রোববার তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। ইমরানের আটকের পর বরিশালের মিডিয়া অঙ্গনে বেশ কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।

খবর পাওয়া গেছে ঝালকাঠির রাজাপুরের বাসিন্দা এমরানুলের নিজ গ্রাম গালুয়ায় তার আটকের খবরে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন