২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরিশালে আকস্মিক বাস ধর্মঘটে সীমাহীন দুর্ভোগ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৩০ অপরাহ্ণ, ১০ আগস্ট ২০১৭

বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার সকল রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট চলছে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়। আকস্মিক ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষ করে প্রবল বর্ষণের মধ্যে দূর দূরন্ত থেকে আসা মানুষগুলো বাস না পেয়ে বেশি মাত্রায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এমতাবস্থায় বরিশাল-পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানিয়েছেন, সম্প্রতি বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকনসহ তাদের ৬ নেতার ওপর হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাও গ্রহণ করেনি পুলিশ।

এছাড়া বরিশালের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়ানি প্রশাসন।

যে কারণে এই দুটি দাবি বাস্তবায়নে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ৩৮ টি রুটে ধর্মঘট অব্যহত থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করেন এই বাস মালিক নেতা।

তবে মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপনদের ধর্মঘটের সাথে একমত নয় জেলা বাস মালিক সমিতি। এই সংগঠনটির সভাপতি আফতাব হোসেন জানিয়েছেন, মিনি বাস মালিক সমিতি জেলা সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত নয়। তাছাড় তাদের আওতাধীন রয়েছে ঝালকাঠি ও পটুয়াখালীসহ ১৩ রুট।

বাকি ২৫ জেলা বাস মালিক সমিতির আওতাধীন। সুতরাং ৩৮টি রুটে ধর্মঘট চলার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া জেলার সংগঠনটি তাদের ধর্মঘটে একত্মতা প্রকাশও করেনি। যে কারণে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে ধর্মঘটের কোন প্রভাব পড়েনি। প্রতিদিনের ন্যায় এই বাসস্ট্যান্ডটি থেকে যথা সময়ে নির্ধারিত উদ্দেশে বাস ছাড়তে দেখা গেছে।’’

এক্ষেত্রে বরিশাল-পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক সেলিম সিকদার ভাষ্য হচ্ছে, ধর্মঘট পালনে জেলা বাস মালিক সমিতির সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। বিকেল নাগাদ তারাও একই সিদ্ধান্তে আসার সম্ভবনা রয়েছে।

তাছাড়া রুপাতলী থেকে এখন পর্যন্ত কোন বাস ছাড়েনি বলে দাবিও করেন মালিক সমিতির এই নেতা।

অবশ্য সরেজমিনেও এমনই চিত্র প্রতীয়মাণ হয়েছে। বাস ধর্মঘটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন রুপাতলীর আওতাধীন রুটের যাত্রীরা।

এক্ষেত্রে যাত্রীদের ভাষ্য হচ্ছে, রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে ধর্মঘটের বিষয়টি শুনেছেন। যে কারণে তারা বেশিমাত্রায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

বরগুনায় গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে উজিরপুর থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে আসেন কামরুল নামে যুবক। কিন্তু বাস ছাড়তে শুনে বেকায়দায় পড়ে যান তিনি। পরিশেষে বাধ্য হয়ে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে ৭০০ টাকা দিয়ে রওনা দিয়েছেন।

একইভাবে বাসযোগে গন্তব্যে যেতে না ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন মরিয়ম আক্তারসহ অনেকে। আকার কেউ কেউ বাস ছাড়ার অপেক্ষায় স্ট্যান্ডে পরিজনদের নিয়ে বসে রয়েছেন। এসব যাত্রীদের দাবি কালবিলম্ব না করে ধর্মঘট নামক যাতাকল বন্ধ প্রশাসনের জরুরি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’’

বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, বাস ধর্মঘটে যাত্রী ভোগান্তির বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে আলাপ হয়েছে। খুব শিগগিরই সমাধানে বাস মালিক শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত রয়েছে। সেখানে বিষয়টি সুরহা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।’’

এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, বাস মালিক নেতাদের সাথে আলাপ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমাধানে সন্ধ্যার পরে তাদের ডাকা হয়েছে।”

 

 

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন