১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরিশালে খাদ্য কর্মকর্তাকে পিস্তল ঠেকিয়ে চেক লিখিয়ে নিলেন আ’লীগ নেতা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৫৬ অপরাহ্ণ, ২০ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: অস্ত্রের মুখে ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাকে জিম্মি করে ৩৬ লাখ টাকার চেক লিখে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সীর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্রপাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খালেদা নাছরিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লিখিত অভিযোগে সুভাষ চন্দ্রপাল উল্লেখ করেন, চলমান সরকারের চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে এক হাজার ১২০ টন চাল সরবরাহের কাজ পান এলাহী অটো রাইস মিলের মালিক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী। তিনি অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এবং সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গৌরনদী খাদ্যগুদামে পঁচা চাল ও ছেড়া বস্তা সরবরাহ করছেন। ভাইস-চেয়ারম্যানের এসব কার্যকলাপে বাধা দিলে তাকে (সুভাষ চন্দ্রপাল) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। বিষয়টি ফুড ইন্সপেক্টর অশোক চৌধুরী অবগত আছেন।

সুভাষ চন্দ্রপাল আরও জানান, সম্প্রতি সারা দেশব্যাপী ধান সংগ্রহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে গৌরনদীতে যখন ধান সংগ্রহ অভিযানে ব্যস্ত, ঠিক তখন ফরহাদ হোসেন মুন্সী গত ১৮ মে তার (সুভাষ চন্দ্রপাল) কাছে এসে গুদামে চাল দেয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু তার চাল না নিয়ে এ মুহূর্তে ধান ক্রয় করা সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য গুদাম খালি রাখার কথা জানালে তিনি (নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী) চাপ প্রয়োগপূর্বক হুমকির মাধ্যমে রুমের মধ্যে অবরুদ্ধ করেন। একপর্যায়ে রুমের টেবিলের ওপর অবৈধ অস্ত্র রেখে ভয় দেখান এবং হুমকি দেন যে, এ উপজেলায় চাকরি করতে হলে আমার নির্দেশ মানতে হবে। এরপর চাল না দিয়ে তিনি জোরপূর্বক ৩৬ লাখ ৭২০ টাকার একটি অগ্রিম চেক দিতে বাধ্য করেন। যার চেক নম্বর- WQSC ডব্লিউকিউএসসি ২৬৬০৯৫০।

‘এ অবস্থায় নিজের চাকরি ও কর্মক্ষেত্রে জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিকেলে (সোমবার) গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খালেদা নাছরিনের বরাবর অভিযোগ ও আবেদন করেছি’- উল্লেখ করেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা।

অভিযোগ ও আবেদনপ্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খালেদা নাছরিন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গৌরনদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও এলাহী অ্যাগ্রো অটো রাইস মিলের মালিক ফরহাদ হোসেন মুন্সী এ প্রসঙ্গে বলেন, ১৮ নয় ১৯ মে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে বিল পাওনা ছিল। বিল ওঠানোর জন্য চেক নিয়ে এসেছি। হুমকি বা ভয়ভীতি দেখানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

‘আমার দলের প্রতিপক্ষরা বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনে কথা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন’- অভিযোগ করেন তিনি।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন