২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশালে খোলা মাঠে তাবু টাঙিয়ে নেওয়া হচ্ছে পিএসসি পরীক্ষা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৩৪ অপরাহ্ণ, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

ভবন সংকটের কারণে বরিশালের বানারীপাড়ায় প্রাথমিক সমাপনী (পিএসসি) ও ইবতেদায়ী পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে খোলা মাঠে তাবু টাঙিয়ে। উপজেলার পশ্চিম চাখার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাবুর নিচে পরীক্ষা দিচ্ছেন ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। শুধু এবছরই নয় ২০১৫ সাল থেকেই এভাবে খোলা মাঠে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে বলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে।

বানারীপাড়া উপজেলায় ১২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৫৫টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং ৭টি কিন্ডার গার্টেন মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ২শ’৮৫ জন। এদের মধ্যে ২ হাজার ৭শ’৫ জন প্রাথমিক সমাপনী এবং ৫শ’৮০ জন ইবতেদায়ী পরীক্ষার্থী। উপজেলায় কেন্দ্র সংখ্যা ৯টি।

বৃহস্পতিবার পশ্চিম চাখার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে খোলা মাঠে পরীক্ষা দিচ্ছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। রোদ থেকে বাঁচার জন্য অবশ্য তাবু টানানো হয়েছে। এই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩শ’২২ জন। চাখার প্রাথমিক বিদ্যালয় একতলা বিশিষ্ট ভবনে কক্ষ সংখ্যা তিনটি। এই তিনটি কক্ষে ৩শ’২২ জন পরীক্ষার্থীর বসার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাইরে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বরিশালটাইমসকে বলেন, পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী স্কুলগুলোতে কেন্দ্র করা যায় কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, কোন স্কুলেই পর্যাপ্ত জায়গা নেই। কয়েক বছর ধরে অনেক স্কুল ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় থাকার কারনে এ উপজেলায় ভবনের সংকট রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা খোলা মাঠে পরীক্ষা নিচ্ছি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, শুধু বানারীপাড়া নয় অনেক উপজেলায় ভবন সংকটের কারনে খোলা আকাশের নিচে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। বিভাগের ৬ হাজার ১শ’৬৮ স্কুলের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার স্কুলভবন নানা সমস্যায় জর্জরিত। অনেক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষনা হয়েছে। আবার ঝুঁকিপূর্নের তালিকায় আছে ৬ শতাধিক স্কুল ভবন। বিভাগে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই লাখ। এই সংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় কক্ষ না থাকায় খোলা মাঠে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উম্মে সালমা লাইজু বরিশালটাইমসকে বলেন, অনেক স্কুলের ভবন নেই। কোথাও আবার ঝূঁকিপূর্ণ ভবনেই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কোন কোন ভবনের পলেস্তার খসে পড়েছে, ছাদের পানি শ্রেনী কক্ষে গড়িয়ে পড়ে। অনেক ভবনের দরজা-জানালা নেই। ইতিপূর্বে ঝূঁকিপূর্ণ-জরাজীর্ণ ভবনের সংখ্যা আরো বেশি ছিল।

বিভিন্ন সময় সংষ্কার ও পুণঃনির্মান করায় এই সংখ্যা কমে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা প্রতি মাসেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় পাঠানো হচ্ছে। মূলত ভবন সংকটের কারনে কিছু কিছু জায়গায় খোলা মাঠে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। তবে সেখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই বলে জানান এ শিক্ষা কর্মকর্তা।

বরিশাল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোল্লা মিজানুর রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন, নতুন স্কুল ভবনের চাহিদাপত্র তৈরী করেন উপজেলা প্রকৌশলীরা। তারা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে চাহিদাপত্র ঢাকায় প্রেরন করেন।

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন