১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশালে মৃত্যু ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৫৪ অপরাহ্ণ, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক:: বরিশালের সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে দমনে মাঠে নেমেছে বিশেষ একটি মহল। প্রাণবিয়োগের এই ঘটনাটিকে হাতিয়ার ব্যবহার করে ব্যক্তি-বিশেষকে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার একের পর এক ষড়যন্ত্রের ছক কষছে। এই বিষয়টি এক কান দু’কান হতে হতে পুরো ইউনিয়নে চাউর হয়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক ওই মহলটির ফায়দা লোটার সেই নানামুখী পরিকল্পনা কিছুটা আটকে গেছে। যদ্দুর শোনা গেছে- এখন সেই মৃত মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি সালাম মল্লিকের ছেলে ফারুক মল্লিককে প্রভাবিত করে পুলিশকে ব্যবহার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওই বিশেষ মহলটি। গত বৃহস্পতিবার রাতের স্থানীয় উত্তর কড়াপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের এই ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ রয়েছে বিভ্রান্তির মধ্যে থাকলেও তাদের নানামুখী তদন্ত থেমে নেই।

সংশ্লিষ্ট বরিশাল বিমানবন্দর থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়- সালাম মল্লিকের মৃত্যু ঘটনাটি পুরোপুরি রহস্যবৃত্ত হওয়ায় অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে তার মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ এই ঘটনায় স্থানীয় চা দোকানি কাওসারকে কেউ কেউ অভিযুক্ত করছে। আবার কেউ প্রাণবিয়োগের এই ঘটনায় নিহতের ছেলে ফারুকের দিকে আঙ্গুল তুলছেন। তবে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে একটি মহল বিশেষ যে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে সেই বিষয়টি পুলিশও ইতিমধ্যে অবগত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- পাওনা টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে গত রোববার চা দোকানি কাওসারের সাথে মানসিক ভারসাম্যহীন সালাম মল্লিকের বাকবিতন্ডা ঘটে। এনিয়ে একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাতির খবর পাওয়া যায়। যদিও এই বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যস্ততায় তৎসময়েই মিটে যায়। কিন্তু এই ঘটনার চার দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার রাতে সালাম মল্লিক অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হন এবং রাতেই মৃত্যুবরণ করেন।

এই মৃত্যু ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালাম মল্লিকের ছেলেকে সামনে রেখে রাজনৈতিক শত্রুতা উদ্ধারে শুরু হয় নানামুখী ষড়যন্ত্র। চা দোকানিসহ স্থানীয় আ’লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত বিরোধী মতের ব্যক্তিদেরও হয়রানি করতেও দৌড়ঝাপের বিষয়টি শোনা যায়। ফলে চা দোকানি কাওসারসহ অনেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়েছেন। এমন বাস্তবতায় বরিশালটাইমসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে- এক বিপরিত চিত্র।

অনুসন্ধানী একটি সূত্র জানায়- সালাম মল্লিক মৃত্যুবরণের রাতে তার ছেলে কাওসার তাকে ভাতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই সে অসুস্থ হলে উদ্ধার করে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতের তার পরামর্শে সেখান থেকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ যে কী তা রয়ে গেছে রহস্যবৃত্ত। পুলিশ প্রাণবিয়োগের কারণ উন্মোচনে সালাম মল্লিকের মরদেহ শনিবার ময়নাতদন্ত করেছে। অথচ ওই মহলটি রাজনৈতিকভাবে শত্রুতা উদ্ধারে ইতিমধ্যে মাঠে নেমে এই ঘটনাটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে পুলিশ অবগত জানিয়ে থানার এক কর্মকর্তা বলছেন- প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিতে একটি অপমৃত্যু মামলা গ্রহণ করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে মারধর বা ঘুমের ওষুধ সেবনের আলামত পাওয়া গেলে পরবর্তীতে অন্য রুপ দেওয়া হবে। কিন্তু ঘটনাটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কেউ যাতে ফায়দা লুটতে না পারে সেই বিষয়টিতে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন