১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশালে ৬ বছর ধরে স্কুলে যাননি শিক্ষিকা, তুলছেন বেতন ভাতা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:০০ অপরাহ্ণ, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

বরিশালের মুলাদী থানার জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসা: ঝুমুর আক্তার দীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ স্কুলে ক্লাশ না করিয়ে বেতন তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি তার বদলে অন্য শিক্ষকদের ব্যাবহারও করছে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক। স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাড. তারিকুল ইসলাম পলাশের ভাই’র বউ হওয়ায় এ নিয়ে অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করার সাহসও পায় না। অভিযোগ রয়েছে, বেতনের টাকার অর্ধেক প্রধান শিক্ষককে দেয়ায় তিনিই বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ম্যানেজ করে নেন।

স্কুলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সোমবার (৯ ডিসেম্বর ২০১৯) সরেজমিনে গেলে, স্কুলের কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকারা কথা বলতে রাজি হননি। ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ঝুমুর আক্তার নামে তাদের স্কুলে কোনো ম্যাডাম (শিক্ষিকা) নেই। তাকে চেননা বলে দাবি করেন ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

মজিবুর রহমান সামাজিক বিজ্ঞানের ও গণিত বিভাগের শিক্ষক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাড. তারিকুল ইসলাম পলাশ সাহেবের ভাই’র বউ ঝুমুর আক্তার। এ ব্যাপারে বরিশাল গিয়ে দেখা করে তার সাথে কথা বলতে পারেন।

প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোন টাকার ভাগ নেই না। আমরা রাজকীয় পরিবারের লোক। আমরা সকলে শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী চলি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাড মো. তরিকুল ইসলামের ভাই’র বউ ঝুমুর আক্তার বর্ষার মৌসুমে স্কুলে অনুপস্থিত থাকলেও শীতের মৌসুমে প্রতিদিন নিয়মিত ক্লাস করান। তিনি সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষিকা।

অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষিকা ঝুমুর আক্তারের কাছে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর-পরই তিনি মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি আর রিসিভ করেন নি।

এ ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাড মো. তরিকুল ইসলাম পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, আমার শ্যালক কাষ্টম অফিসার ও যুগ্ম সচিব। আমি একজন আইনজীবী সমিতির সদস্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বলে, তবে আমার ভাই’র বউকে বরখাস্ত করা হবে। সাংবাদিকরা রেশনের চাল দেয়, সেখানে গিয়ে ডিস্টার্ব করে বেড়ায়। তাদের খেয়ে, ধেয়ে কি কাম নাই!

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আনোযার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মুলাদী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে জরুরি ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে অনুসন্ধান পূর্ব প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তদনন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন