২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশাল কড়াপুরের ঐতিহ্যবাহী মিয়াবাড়ি মসজিদ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:১৪ অপরাহ্ণ, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ঐতিহ্যবাহী মিয়াবাড়ি মসজিদ। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি শুধু বরিশালের নয়, বাংলাদেশের প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম।

বরিশাল সদর উপজেলার উত্তর কড়াপুর গ্রামে অবস্থিত দ্বিতল এ মসজিদটি এখনো নামাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়া প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর পর্যটক আসেন বরিশালের এ ঐতিহ্য দেখতে।

১৮ শতকে নির্মিত মোঘলরীতির এ মসজিদের ঐতিহ্যের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সম্প্রতি প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর কড়াপুর মিয়াবাড়ি মসজিদটি সংস্কার ও রঙ করার কাজ শুরু করেছে। তবে এ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

চারকোনা এই মসজিদের উপরিভাগে তিনটি ছোট আকারের গম্বুজ রয়েছে। তিনটি গম্বুজের মাঝখানের গম্বুজটি অন্য দুটি গম্বুজের চেয়ে আকারে কিছুটা বড়।

মসজিদের সামনের দেয়ালে চারটি মিনার এবং পেছনের দেয়ালে চারটি মিনারসহ মোট আটটি বড় মিনার রয়েছে। এছাড়া সামনে ও পেছনের দেয়ালের মধ্যবর্তী স্থানে আরো ১২টি ছোট মিনার রয়েছে।

মসজিদের উপরিভাগ (সিলিং) ও সবগুলো মিনারে নিখুঁত ও অপূর্বসুন্দর কারুকাজ করা।

এদিকে, উঁচু ভিত্তির ওপর নির্মিত মিয়াবাড়ির এ মসজিদের পূর্বদিকে রয়েছে বিশালাকারে এক দিঘী। দিঘীর পানিতে মসজিদের বিম্ব যেকোনো মানুষকে মুগ্ধ করে।

বর্তমানে মসজিদটির দ্বিতীয় তলায় নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় তলায় উঠতে বাইরে থেকে দোতলা পর্যন্ত একটি প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। আর নিচতলায় কয়েকটি কক্ষে বর্তমানে একটি মাদ্রাসার কার্যক্রম চলছে। এছাড়া সিঁড়ির নিচের ফাঁকা জায়গায় রয়েছে দুটি কবর।

প্রতিদিন মসজিদটি দেখতে অনেকে আসলেও যাতায়াতে তাদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের নবগ্রাম রোড থেকে মসজিদ পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। ফলে প্রায়ই ছোটখাট দুর্ঘটনার শিকার হন পর্যটকরা। তবে এ পথে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা বা ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলারযোগে যাতায়াত করা যায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন- মোঘল আমলের এ স্থাপনাটি দেখতে অনেক মানুষ আসেন। কিন্তু যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সড়কটি সংস্কার না করায় যাতায়াতের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে এটি।

হাবিবুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানিয়েছেন- দর্শনার্থীদের কেউ কেউ মসজিদের ওপরে উঠে ছবি তোলেন। ধর্মীয় কারণে বিভিন্ন সময় ছবি তুলতে বা ভেতরে প্রবেশে নিষেধ করা হলেও মানতে চান না অনেকে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও ইতিহাস সূত্রে জানা গেছে- মিয়াবাড়ি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হায়াত মাহমুদ নামে এক ব্যক্তি। তৎকালীন ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নির্বাসিত হন তিনি। এ সময় তার জমিদারিও কেড়ে নেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে ফিরে তিনি এলাকায় দুটি দিঘী ও দ্বিতল এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।

15 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন