২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশাল দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধাচারণ করলেন সেটেলমেন্ট সার্ভেয়ার মনির!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:৪৬ অপরাহ্ণ, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অভিযানের নামে ঝালকাঠিতে সেটলমেন্ট কার্যালয়ের তিন কর্মচারির কাছ থেকে বেতনের টাকা, ছাপাপর্চা ও নকশা বিক্রির টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল দুদকের উপ পরিচালক দেবদ্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ঝালকাঠি সেটলমেন্ট কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো. মনির হোসেন। দুদক কর্মকর্তারা তাকে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ওই অফিসের পেশকার মো. নজরুল ইসলাম ও অফিস সহায়ক সুধির রঞ্জন কিত্তনীয়া উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে সার্ভেয়ার মো. মনির হোসেন দাবি করেন- গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল দুদকের উপ পরিচালক দেবদ্রত মন্ডলের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচতলায় সেটলমেন্ট অফিসে যান। তারা ভেতরে ঢুকে দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়।

অভিযানের নামে দুদক কর্মকর্তারা পাঞ্জাবির পকেট থেকে তার জানুয়ারি মাসের বেতনের ১১ হাজার ৪৭০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এই টাকা বেতনের বলার পরও দুদকের কর্মকর্তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। পরে পেশকার মো. নজরুল ইসলাম ও অফিস সহায়ক সুধির রঞ্জন কিত্তনীয়ার কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য রাখা ছাপাপর্চা এবং নকশা বিক্রির পাঁচ হাজার ৩৭০ টাকাও নিয়ে যান।

মনির হোসেন বলেন- আমার মূল কর্মস্থল কুমিল্লা জোনাল অফিস। আমাকে প্রেষণে ঝালকাঠি সেটলমেন্ট অফিসে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিমাসে আমি কুমিল্লা গিয়ে বেতনের টাকা তুলি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আমি কুমিল্লা জোনাল অফিসে গিয়ে জানুয়ারি মাসের বেতনের ২৪ হাজার টাকা তুলে আমার স্ত্রীকে ১১ হাজার টাকা দিয়ে আসি। বাকি ১৩ হাজার টাকা নিয়ে আমি ঝালকাঠি রওয়ানা হই। যাতায়াতে আমার ১৫০০ টাকা খরচ হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে আমি একটি হোটেলে ৩০ টাকার নাস্তা করেছি। সর্বশেষ আমার পকেটে ১১ হাজার ৪৭০ টাকা ছিল। দুদক কর্মকর্তারা আমার কাছে কত টাকা আছে জানতে চাইলে আমি ১১ হাজার ৪৭০ টাকার কথা বলেছি। তারা আমার পাঞ্জাবির পকেট ছিড়ে সব টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমার দেওয়া হিসেবের বাইরে তারা একটি টাকাও পায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে সার্ভেয়ার মানির বলেন, দুদক টিমের দুই কর্মকর্তা আমাকে গালিগালাজ ও জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করে। এক কর্মকর্তা আমাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডের ভয় দেখায়।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দুদকের এই হয়রানির বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সেটলমেন্ট অফিসের তিন কর্মচারি।

অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল দুদকের উপ পরিচালক দেবব্রত মন্ডল বলেন- সেটলমেন্ট অফিসের তিন কর্মচারির কাছে যে টাকা পাওয়া গেছে, তার কোনো সঠিক প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা। যেহেতু তারা টাকাগুলো বেতন ও পর্চা বিক্রির দাবি করেছে, তাই টাকাগুলো জব্দ না করে বরিশাল সেটলমেন্টের জোনাল অফিসের কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

সেই অভিযানের পর জোনাল অফিস ঝালকাঠি সেটলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তাসহ চারজনকে অন্যত্র বদলি করেছেন।’’

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন