২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরিশাল বোর্ডে কর্মচারীদের দুই গ্রুপের হাতাহাতি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:১০ অপরাহ্ণ, ২৫ জুন ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিএনপিপন্থী ৮ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি পাইয়ে দিতে কমিটি করাকে কেন্দ্র করে কর্মচারীদের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুসের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পদোন্নতি সংক্রান্ত প্রস্তুতি কমিটির একটি ঘোষণার পর বোর্ড চেয়ারম্যানের কক্ষেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পন্থী দুই দল কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বোর্ডের বিএনপিপন্থী কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বোর্ডের স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি দেয়া যায় কিনা সে সম্পর্কে একটি সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য মঙ্গলবার তিন সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়। শিক্ষাবোর্ড সচিব প্রফেসর বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য্য স্বাক্ষরিত আদেশে গঠিত এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন খানকে। সদস্য করা হয় উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন ও হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মামুন হোসেনকে। বিএনপিপন্থী ৮ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতেই এ কমিটি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষুব্ধ আওয়ামীলীগ পন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সূত্র আও জানায়, কমিটি ঘোষণার পরই এর প্রতিবাদ জানিয়ে বোর্ড শ্রমিকলীগ সভাপতি কাজী আ. জলিলের নেতৃত্বে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যান বরিশাল বোর্ডের আওয়ামীলীগ পন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর কিছুক্ষণ পরেই শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে প্রবেশ করে কর্মচারী সংঘের সাবেক সভাপতি এবং বোর্ডের শ্রমিক দলের সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ বিএনপিপন্থীরা। বিএনপিপন্থীদের নেতৃত্বে বর্তমান কর্মচারী সংঘ সভাপতি আবু জাফর ছিলেন। পরে বিএনপিপন্থী কর্মচারীরা আওয়ামীলীগপন্থী কর্মচারীদের ওপর চড়াও হলে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে, চেয়ারম্যান মো. ইউনুসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে বোর্ডের শ্রমিকলীগ সভাপতি কাজী আ. জলিল দৈনিক শিক্ষাকে জানান, আমরা বিএনপিপন্থী কর্মচারীদের পদোন্নতি দেবার জন্য কমিটি করার বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যাই। তখন বিএনপি জামায়াত কর্মীদের নিয়ে শ্রমিকদল নেতা শহিদুল ইসলাম সেখানে প্রবেশ করে আমাদের ওপর চড়াও হয়। এরপর তারা আমাদের সংগঠন বিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল করে। তিনি আরও জানান, বোর্ডে পদোন্নতির জন্য সিলেকশন কমিটি রয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো কমিটি গঠন করা বিধি বহির্ভুত। আমরা সে বিষয়টিতেই বাঁধা দিতে চেয়েছি।

তবে, শ্রমিকদল সভাপতি ও বর্তমান সেকশন অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের কাজ করেছি। কারো ওপর হামলা চালাইনি।

অভিযোগ পাওয়া যায়, পদোন্নতির তালিকার শীর্ষে যে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তার মধ্যে ৮ জন বিএনপিপন্থী। এদের মধ্যে রয়েছেন সেকশন অফিসার সাবেক বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সহ-সচিব ও বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘের সাবেক সভাপতি মো: মিজানুর রহমান, উচ্চমান সহকারী ও বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক এবি এম মিজানুর রহমান, সেকশন অফিসার ও বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘের অর্থ সম্পাদক আহসানুল কবির। এছাড়া পদোন্নতি তালিকায় রয়েছেন বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘের সদস্য ও সেকশন অফিসার সাজিয়া হাসান লুনা, হিসাব সহকারী জাহাঙ্গির আলম, ভারপ্রাপ্ত সেকশন অফিসার কে এম ফরিদ হোসেন ও সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আ. ছালাম। আর এদের পদোন্নতির জন্য বোর্ড প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছে বর্তমান কর্মচারী সংঘের সভাপতি আবু জাফর।

এই বিষয়ে বরিশাল বোর্ডের সচিব অধ্যাপক বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, আমি চেয়ারম্যানের নির্দেশে কমিটি করেছি। তিনিই এই বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: ইউনুসের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন রেখে দেন।

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন