১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বাংলাদেশের আলোচিত ৬ হত্যা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৫০ অপরাহ্ণ, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

 

বার্তা পরিবেশক অনলাইন:: বাংলাদেশে গত ছয় মাসে ৬টি হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।এই ৬ হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে- চলন্ত বাসে তানিয়া হত্যা, তাসলিমা বেগমের রেণু, বিচারকের সামনে ফারুক হত্যা, নুসরাত হত্যা, রিফাত হত্যা, আবরার হত্যা।

আবরার হত্যা

চলতি মাসের ৬ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ওই রাতে শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আবরার হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আবরার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। তার বাবা বরকত উল্লাহ একজন এনজিওকর্মী, মা রোকেয়া বেগম কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবরার বড়। তার ছোট ভাই ঢাকা কলেজের ছাত্র।

রিফাত হত্যা

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। এরপর এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড (২৫) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

নুসরাত হত্যা

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী নুসরাত গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে তাঁকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে তার মায়ের শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত মারা যান। ২৪ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

বিচারকের সামনে ফারুক হত্যা

বিচারকের সামনে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিকে হত্যা করা হয়। ১৫ জুলাই বেলা ১১টার দিকে বিচারক এজলাসে আসেন। চেয়ারে বসে মামলার কাগজপত্র হাতে নেন। ঠিক ওই সময় মামলার চার নম্বর আসামি ফারুককে ছুরিকাঘাত করে ছয় নম্বর আসামি হাসান। জীবন বাঁচাতে ফারুক এজলাসে উঠে পড়েন, বিচারকসহ আইনজীবীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। দৌড়াতে থাকে ফারুকও। বিচারকের খাস কামরার দিকে ছুটে যান তিনি। পেছন পেছনে দৌড়ে আসে হাসানও। এসে ফারুককে বিচারকের টেবিলের ওপর ফেলেই ছুরিকাঘাতে হত্যা করে হাসান।

তাসলিমা বেগমের রেণু

চলতি বছরের ২০ জুলাই রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তাসলিমা বেগম রেণুকে ‘ছেলেধরা’ গুজব ছড়িয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি ওই স্কুলে তার দুই সন্তানের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। তাসলিমাকে পিটিয়ে মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তখনো আলোচনায় গুরুত্ব পায় মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলা কেমনে সম্ভব? তাসলিমাকে মারার দৃশ্য ভিড় করে মানুষ দেখছিলেন এবং অনেকে ভিডিও করছিলেন সেই দৃশ্য। কেউ তাঁকে বাঁচাতে আসেননি।

চলন্ত বাসে তানিয়া হত্যা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলন্ত বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার ওরফে তানিয়াকে (২৫) ধর্ষণের পর হত্যার করে বাসচালক নূরুজ্জামান। গত ৬ মে রাতে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুরগামী স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসে নিজ বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন শাহিনুর আক্তার। বাসটি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে অন্য যাত্রীরা নেমে যান।

পরে কটিয়াদী থেকে পিরিজপুরে যাওয়ার পথে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় গজারিয়া জামতলী এলাকায় চলন্ত বাসে চালক নুরুজ্জাামান, চালকের সহযোগী লালন মিয়া ও চালকের খালাতো ভাই বোরহান উদ্দিন তাঁকে ধর্ষণের পর চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেন। মুমূর্ষু অবস্থায় শাহিনুরকে উদ্ধার করে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তে শাহিনুরকে গণধর্ষণের পর হত্যার আলামত পাওয়া যায়।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন