২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বাউফলে স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়ের বেহাল অবস্থা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৩৭ অপরাহ্ণ, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

বাউফলে স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়ের বেহাল অবস্থা

মোঃ জসীম উদ্দিন, বাউফল >> পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয় (সাবেক পুরাতন হাসপাতাল) বেহাল অবস্থায় আছে। এক সময় পুরাতন হাসপাতালে বসেই উপজেলার মানুষদের চিকিৎিসা সেবা দেওয়া হতো। কার্যালয়ের সামনে ও আশে-পাশে ভরে গেছে লতা পাতা ও গাছপালাসহ অনেক জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। দেখার কেউ নেই। স্বাস্থ্য অফিসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বিশেষ কাজ ছাড়া অফিস কক্ষ সব সময় তালাবদ্ধ থাকে। আশে পাশের ব্যবসায়ীরা ও পথচারিরা ওই অফিসের প্রবেশ পথে প্রসাব করে। সোমবার (৬ সেপ্টম্বর) সকাল ১১টার দিকে ওই কার্যালয় বন্ধ দেখা যায়। অফিসে নিয়মিত একজন পিওন থাকার কথা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, কার্যালয়ের আশেপাশে গাছপালা ও ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গায় গড়ে ওঠেছে অবৈধ স্থাপনা। নির্দিষ্ট কোন ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা না থাকায় এলাকার ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা ওই অফিসে চলার পথে রাস্তার পাশে স্তূপ করে। ময়লা-আবর্জনার পচার দুর্গন্ধে আশপাশের বাসার লোকজন ও পথচারিরা চলাচল করতে পারছে না। খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সেগুলো ক্রমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অফিসের পাশের জলাশয়গুলোতেও গিয়ে পড়ছে।
একদিকে বাতাসে যেমন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, তেমনি মশা-মাছিও সৃষ্টি হচ্ছে। কয়েক মাস আগে ভবনটি মেরামত করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ওই সরকারি অফিসে কখনো জাতীয় পতাকা টাঙানো হয় না। নেই কোন সাইনবোর্ড। দেখলে মনে হয় না স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় না অফিস কক্ষ ও অফিসের আশ-পাশ। সাধারণ জনগণ তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষ কাজ ছাড়া কর্তা-ব্যক্তিরা অফিসে আসেন না। মাঝে-মাঝে অফিসে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান। বেশী ভাগই অফিসের কক্ষ তালাবদ্ধ থাকে। অফিসের কোন খোঁজ-খবর রাখেন না। স্বাস্থ্য পরিদর্শকের হাট-বাজারে বিভিন্ন দোকানে ভেজাল অভিযান পরিচালনা করার কথা তাকলেও কিন্তু তা হচ্ছে না। তিনি থাকেন দশমিনা।

এ ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা বলেন, ভাই আপনারা একটু পত্রিকায় লেখেন। স্বাস্থ্য বিভাগের অবস্থা যদি এই হয় তা হলে সাধারণ জনগণের অবস্থা কি হবে। এরা জনগণকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ স্বাস্থ্য সস্পর্কে পরামর্শ দিবে যাতে অসুখ বিসুখ না হয়। বরং এখন দেখছি তাদেরকে পরামর্শ দিতে হবে তাদের অফিস পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার। নিয়মিত কার্যালয় না খোলায় দিবা-রাত্রি বহিরাগতের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। মনে হয় দেখার কেউ নেই। জনগণ তাদেরকে না পেয়ে ফিরে যায়।

এবিষয় স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয়ের অফিস সহায়কের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন বাউফলে স্বাস্থ্য পরিদর্শক স্যার অন্যত্র বদলি হওয়ায় দায়িত্বে আছেন দশমিনা ও পটুয়াখালীর দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাহাবুদ্দিন স্যার। তিনি মাঝে মাঝে আসেন। অফিসের বেহাল অবস্থার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে আগামী কাল মঙ্গলবার সব পরিস্কার করে দিবে। অফিসে তিনি নিয়মিত আসেন। নিয়মিত আসলে আজ কেন পাওয়া যায়নি এমন প্রশ্ন করলে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে পরে ফোন দিবে।

এবিষয় স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাহাবুদ্দিন বলেন, অফিস অপরিস্কার বসার মত ভাল স্থান না থাকায় স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কার্যালয় না এসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করেন। অফিস সহায়ক অসুস্থ, মাথায় সমস্যা আছে ১৫দিন পর্যন্ত অফিসে আসেন না।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, বাউফলে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদটি খালি কেউ আসতে চায়না। দশমিনা অফিস থেকে সাহাবুদ্দিন নামে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শক দেওয়া হয়েছে। তিনি মাঝে মাঝে আসেন। অফিসের চারপাশে গাছপালা ও ঝোপঝাড় দুই এক দিনে মধ্যে পরিস্কার করা হবে। অফিসে প্রবেশ পথে যাতে প্রসাব করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।’

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন