২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

বাউফলে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:০৮ অপরাহ্ণ, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাউফল:: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের (একাংশ) মিছিল থেকে ১০ টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও একটি শিশুপার্কে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধকে কেন্দ্র করে গত সোমবার ওই ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ওইসব ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

আওয়ামী লীগের এক পক্ষে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় সাংসদ সদস্য আ.স.ম ফিরোজ। অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র মো. জিয়াউল হক জুয়েল।
দলীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে,গত শনিবার ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে উপজেলা সদরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি,হাতাহাতি ও মেয়র পক্ষের ছাত্রলীগের ফুলের তোরা ভাঙার ঘটনা ঘটে।

এর প্রতিবাদে মেয়র পক্ষ উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগ রোববার সন্ধ্যার পর মিছিল বের করলে ওই মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

এ ঘটনায় আহত সাংসদ সদস্য আ.স.ম ফিরোজ পক্ষের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. হারুন অর রশিদ খান বাদী হয়ে বাউফল থানায় মেয়র পক্ষের ৩৪ নেতাকর্মীর নামে মামলা করেন। এছাড়াও রোববারের সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে সাংসদ সদস্য আ.স.ম ফিরোজ পক্ষের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে গত সোমবার বেলা ১১ টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং বাউফল থানার সামনের সড়কে গাছের গুড়ি ও টায়ার চালিয়ে তাঁরা প্রায় দেড় ঘন্টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে। ওই সময় মিছিল থেকে বাউফল পৌরসভার বাজার সড়ক থেকে গোলাবাড়ি পর্যন্ত ১০ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে থানার অদূরে ২৫-৩০ জনের একটি দল শিশুবন নামে একটি শিশুপার্কের মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সন্ধ্যার দিকে বাংলাবাজার এলাকার আবদুল আজিজ শিকদার নামের এক ব্যবসায়ির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

শিশুপার্কের মালিক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম ওরফে শিপন অভিযোগ করেছেন, পুলিশের উপস্থিতেই তাঁর শিশুপার্কটিতে হামলা চালানো হয়। শিশুদের খেলনা ভেঙে ফেলা হয়। এ বিষয়ে মামলা করার জন্য বাউফল থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বাংলা বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মো. আবদুল আজিজ অভিযোগ করেছেন,প্রকাশ্যে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে। একাধিক তেলের ব্যারেল কেটে রাস্তার ওপর ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমার দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি পালিয়ে বেরাচ্ছি। ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সফিকুল ইসলাম শিপন ও আবদুল আজিজ মেয়র সমর্থিত।

নাম প্রকাশে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘পুলিশের অসহযোগিতার কারণেই তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে খবর শুনে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন