২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বাকেরগঞ্জের শ্রীমন্ত নদীর অস্তিত্বই বিলীনের পথে

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪০ অপরাহ্ণ, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

মুহঃ সফিক খান, বাকেরগঞ্জ:: জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে শিগগিরই উদ্ধোধন হবে বাকেরগঞ্জ উপজেলা সদরে শ্রীমন্ত নদীর ওপর বাকেরগঞ্জ ব্রীজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ‘ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রীজ ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় ডেনকো লিঃ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্রীজটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। বুধবার জাপানের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট লিমিটেড এবং রোডস এন্ড হাইওয়ের একটি প্রতিনিধি বাকেরগঞ্জ ব্রীজ এলাকা পরিদর্শন করে। রোডস এন্ড হাইওয়ে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর পরিদর্শন শেষে ফাইনাল বিল পরিশোধ করা হবে। কিন্তু উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিতভাবে দুই বছর যাবৎ অবৈধ বাঁধ দিয়ে ব্রীজ নির্মাণে নদীর অস্তিত্বই আজ বিলীনের পথে। ব্রীজটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে হলেও বাঁধসহ পলি মাটি পুনঃখনন করছে না কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয় বাকেরগঞ্জ পৌর মেয়র মো. লোকমান হোসেন ডাকুয়া বাঁধ সরানো ও পলি মাটি পুনঃখননের জন্য বারবার তাগিদ দিলেও কালখেপন করছেন ব্রীজ কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, এই নদীটি তুলাতলী নদী হয়ে বাকেরগঞ্জ বন্দরের কোল ঘেষে শেখ হাসিনা কেন্টনমেন্ট পাশ দিয়ে পায়রা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। ইজারাভুক্ত হাট কালীগঞ্জ, নিউমার্কেট, হাজীর হাট, কানকীসহ ছোট-বড় অনেক সাপ্তাহিক হাটে যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিলো এই শ্রীমন্ত নদী। শ্রীমন্ত নদীর দুই পাশে রয়েছে উপজেলার রঙ্গশ্রী, পাদ্রীশিবপুর, ভরপাশা ইউনিয়নসহ পটুয়াখালী জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। চাষীদের চাষাবাদের জন্য পানিপ্রবাহের একমাত্র নদী। ব্যস্ত নৌপথ ছিল এটি। অবৈধ বাঁধ দেয়ার ফলে দুই বছরে বর্ষা মৌসুমে পলিমাটি জমে নদী ভরাট হওয়ার কারণে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে হাজারো কৃষকদের ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানি না পাওয়ার কারণে রবি শষ্য ফলাতে চাষীদের ব্যাপক ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। অপর দিকে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে দুর্গন্ধসহ নানা রোগজীবানু ছড়াচ্ছে। এতে করে নদীটি এখন মৃতপ্রায়।স্থানীয় জেলেরা জানান, দুই বছর আগেও শ্রীমন্ত নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত তারা। বাঁধ দেয়ায় নদীটিতে পানি প্রবাহ না হওয়ায় তারা বেকার হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাকেরগঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ বিবেচনায় নিয়ে শ্রীমন্ত নদীকে কেন্দ্র করে এর পাড়ে গড়ে ওঠে উপজেলার অনেক বাজার। এখনো বর্ষাকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাট বাজারে এই নদী দিয়ে মালামাল পরিবহন করা হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী শাসন করে অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে ব্রীজ নির্মাণ করা হযয়েছে। এই নদী না বাঁচলে নৌপথ বন্ধ হবে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগস্থ হচ্ছে, বেশি ক্ষতি হচ্ছে কৃষির, ধ্বংস হস্তে মৎস্য সম্পদ। একই সঙ্গে পরিবেশও বিপন্ন হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে নদীতে অবৈধ বাঁধ দিয়ে ব্রীজ নির্মাণ দুঃখজনক। শ্রীমন্ত নদীর অবৈধ বাঁধ অবমুক্ত ও পলি মাটি দ্রুত অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন