২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বাবরি মসজিদের জমি নিয়ে সিদ্ধান্ত ২৬ নভেম্বর : সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৫৭ অপরাহ্ণ, ১১ নভেম্বর ২০১৯

দীর্ঘদিনের বিতর্কিত অযোধ্যার মামলার রায়ে বাবরি মসজিদের জায়গার পরিবর্তে মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তবে ওই জমি নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে আগামী ২৬ নভেম্বর সিদ্ধান্ত নেবেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। গতকাল রোববার সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বিষয়টি জানিয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়।

গত শনিবার বাবরি মসজিদ মামলার বিতর্কিত ২ দশমিক ৭৭ একর জমিতে মন্দির নির্মাণের জন্য অনুমতি দেন ভারতের আদালত। পাশাপাশি মুসলিমদেরকে মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের সভাপতি জাফর ফারুকী জানান, ওই জমির বিষয়ে নানা ধরনের মতামত পাচ্ছেন তিনি। আগামী ২৬ নভেম্বর বোর্ডের সাধারণ সভার বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে ৫ একর জমি নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, যদিও ১৩ নভেম্বর ওই বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল, পরে সেটা স্থগিত হয়ে যায়। ২৬ নভেম্বর যে বৈঠক হবে সেখানে এই জমি গ্রহণ করা হবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জমি নেওয়ার বিষয়ে আমি বিভিন্ন মতামত পাচ্ছি। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় একমাত্র ইতিবাচক মানসিকতার মাধ্যমেই যাবতীয় নেতিবাচক বিষয়কে দূরে সরানো সম্ভব।

জাফর ফারুকী বলেন, কিছু ব্যক্তি এমন পরামর্শ দিচ্ছেন যে, বাবরি মসজিদের জন্য ওই ৫ একর জমি নেওয়া উচিত নয়। তবে আমি মনে করি এই ধরনের ভাবনা আসলে নেতিবাচকতাই বাড়াবে।

তিনি আরও বলেন, আবার কিছু মানুষ এমন পরামর্শও দিচ্ছেন যে, ওই জমিটি ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে গ্রহণ করা উচিত এবং সেখানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়া উচিত, যেখানে একটি মসজিদও স্থাপন করা হবে।

ওয়াকফ বোর্ডের এই সভাপতি বলেন, ‘আমরাই সিদ্ধান্ত নেব, ওই জমি আমরা নেব কি নেব না। শেষ পর্যন্ত জমি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা কীভাবে নেওয়া হবে এবং এর অবস্থা কী হবে; এই বিষয়গুলোতেও আমরা সেদিনই সিদ্ধান্ত নেব।’

১৯৯২ সালে কট্টর হিন্দুরা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় কমবেশি ২০০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল। কট্টরপন্থী হিন্দুরা দাবি করেন বাবরি মসজিদের জায়গাতেই ভগবান রামের জন্ম হয়েছিল এবং একটি রামমন্দির ভেঙে মোঘল আমলে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তৈরি হয় সাম্প্রদায়িক হিংসা। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ১০ দিন পর, লিবারহেন কমিশন তৈরি করা হয় ঘটনার তদন্তে। ২০০৯-এ কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। তাতে নাম ছিল একে আডবানি, অটলবিহারী বাজপেয়ি এবং অন্যান্য বিজেপি নেতাদের, প্রায় ১৭ বছর পর শুরু হয় তদন্ত।

১৫২৮ সালে অযোধ্যায় তৈরি হয় এই বাবরি মসজিদ। ১৮৫৩ সালে প্রথমবার এই জায়গাটিকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হিংসা হয়। ১৮৫৯ সালে ইংরেজ প্রশাসন ওই জায়গাটিতে হিন্দু এবং মুসলিমদের প্রার্থনা জন্য ফেন্স লাগিয়ে দেয়, প্রায় ৯০ বছর ধরে এটি ছিল। ১৯৪৯ সালে প্রথমবার জায়গাটিকে নিয়ে মামলা হয় মসজিদের পাশে ভগবান রামচন্দ্রের মূর্তি লাগানোর পর।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন