২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বাবুগঞ্জের ৪ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন যারা…

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:১৮ অপরাহ্ণ, ২২ জুন ২০২১

বাবুগঞ্জের ৪ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন যারা

আরিফ আহমেদ মুন্না >> ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বাবুগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের দুইজন, জাতীয় পার্টির একজন এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। নির্বাচিতরা হলেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান হিমু খান, দেহেরগতি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মোঃ মশিউর রহমান, মাধবপাশা ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির সিদ্দিকুর রহমান এবং কেদারপুরে আওয়ামী লীগের নুরে আলম বেপারী।

বাবুগঞ্জ উপজেলার গর্বিত সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নামে নামকরণ করা জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। এতে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান হিমু খান ৬ হাজার ৭৩৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস.এম তারিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ২৮ ভোট। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সাহাদাত হোসেন হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৮৫ ভোট। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২০ হাজার ৬৫৩ জন ভোটারের মধ্যে ১১ হাজার ১৭৬ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, যার শতকরা হার ৫৪.১১%।

উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নে পুনরায় বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ মশিউর রহমান। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ৩৮৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী রকিবুল খান রনি হাতুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৫১ ভোট। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের নুরুদ্দীন খান ৯০৪ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মেজবাহ উদ্দিন সজল ৩৪৯ ভোট পেয়েছেন। দেহেরগতি ইউনিয়নে মোট ১৯ হাজার ১৬৯ ভোটারের মধ্যে ১৩ হাজার ২৫২ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট প্রদানের শতকরা হার ৬৯.১৩%।

উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে ৬ হাজার ৩১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের জয়নাল আবেদীন হাওলাদার পেয়েছেন ৫ হাজার ৩১০ ভোট। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মহিদুল ইসলাম লিটন ৬৬৬ ভোট, জামাল খান ২৩৩ ভোট এবং আনোয়ার হোসেন রিপন মোল্লা ১১৬ ভোট পেয়েছেন। মাধবপাশা ইউনিয়নে মোট ২৪ হাজার ২৬১ জন ভোটারের মধ্যে ১৩ হাজার ২২১ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট প্রদানের শতকরা হার ৫৪.৪৯%।

উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরে আলম বেপারী নৌকা প্রতীকে ৬ হাজার ৬৮৮ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মুহাঃ জামাল উদ্দিন হাতুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৯৩৬ ভোট। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আবদুস সাত্তার হাওলাদার ৭৭৫ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহাবুব আলম মাসুম মৃধা পেয়েছেন ২৮ ভোট। কেদারপুর ইউনিয়নে মোট ১৯ হাজার ৭০ জন ভোটারের মধ্যে ১০ হাজার ৭১১ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে ভোট প্রদানের শতকরা হার ৫৬.১৭%।

সোমবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগণনা শেষে রাত ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আমীনুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম। উপজেলা অডিটোরিয়ামে নির্বাচনী কন্ট্রোল রুমে ওই ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান, রিটার্নিং অফিসার ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ওবায়দুল্লাহ, বিমানবন্দর প্রেসক্লাব সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির উপজেলা সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না, জাতীয় পার্টির সভাপতি মকিতুর রহমান কিসলু, ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক শাহিন হোসেন, মাধবপাশা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, কেদারপুর ইউপি নুরে আলম বেপারীসহ বিভিন্ন চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থী ও তাদের এজেন্টসহ বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনে বিভিন্ন ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন ও ছোটখাটো দু’একটা হাতাহাতির ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনে পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও আন্তরিকতা ছিল লক্ষণীয়। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আলাদা পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি টহল দিয়েছে। এছাড়াও ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন পরে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা। অনেক ভোটার তাদের ভোটদানের পরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বর্তমান সরকার এবং প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন