২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বাবুগঞ্জে গরীবের শরীফ ডাক্তার আর নেই, শোকার্ত মানুষের ঢল

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৫৩ অপরাহ্ণ, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আরিফ আহমেদ মুন্নাআমেনা বেগম হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক ডাঃ আল আমিন শরীফের বাবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার ও বাবুগঞ্জের গরীবের ফ্রি ডাক্তার নামে পরিচিত হোমিও চিকিৎসক বিশিষ্ট সমাজসেবক ডাঃ আলফাজ উদ্দিন শরীফ (১০০) আর নেই। বার্ধক্যজনিত রোগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুর ২টার দিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। (ইন্নালিল্লাহি …… রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ৩ মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গ্রণগ্রাহী রেখে গেছেন।

রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার খানপুরা গ্রামে তার নামাজে জানাজা শেষে তারই প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ খানপুরা জামে মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়। গরীবের শরীফ ডাক্তার নামে পরিচিত আলফাজ উদ্দিন শরীফের মৃত্যুতে বাবুগঞ্জের খানপুরা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবার প্রিয় শরীফ ডাক্তারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাদের গ্রামের বাড়িতে হাজার হাজার শোকার্ত জনতার ঢল নামে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হলেও তাতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, আলফাজ উদ্দিন শরীফ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার পদের চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেন। জমিজমার নিখুঁত পরিমাপ ও সততার কারণে তিনি উপজেলায় অসংখ্য জমি সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসাসহ অগণিত মামলা নিষ্পত্তি করে সর্বমহলে আস্থাভাজন হয়েছিলেন। এছাড়াও একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে গরীব রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দিতেন তিনি। দুঃস্থ-অসহায় মানুষের কাছে তিনি ছিলেন আপনজন। দূরদূরান্তে রোগীদের বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে কিংবা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ দেওয়ার কারণে তাকে গরীবের শরীফ ডাক্তার বলা হয়।

কর্মময় বর্ণাঢ্য শতবর্ষী জীবনের শেষের দশকে তিনি বার্ধক্যের কারণে হোমিও চিকিৎসার পেশা ছেড়ে দিলেও ইসলামের প্রচার ও প্রসার কাজে মনোনিবেশ করেন। তিনি বাড়ির পাশেই দক্ষিণ খানপুরা জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা ছাড়াও ২টি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কমপক্ষে ৩০টি মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানা তার প্রত্যক্ষ পরিশ্রম ও সহযোগিতায় নির্মিত হয়। ইসলাম প্রচারের জন্য এলাকায় নিয়মিত ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন করতেন তিনি। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে সবসময় তিনি মানুষকে সৎপথে চলার উপদেশ দিতেন। এছাড়াও তিনি বিনামূল্যে কোরআনের আয়াতের সাহায্যে বিভিন্ন জটিল ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা দিতেন বিধায় গ্রামের অনেকেই তাকে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে মনে করতেন। #

17 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন