২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বাসায় ফিরে ডাক্তারদের এক হাত নিলেন তসলিমা নাসরিন!

বরিশালটাইমস, ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:৩৬ অপরাহ্ণ, ২১ জানুয়ারি ২০২৩

বাসায় ফিরে ডাক্তারদের এক হাত নিলেন তসলিমা নাসরিন!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ভুল চিকিৎসা নিয়ে নেটপাড়ায় চলছে তোলপাড়। সম্প্রতি ভারতে তার অপারেশন হয়, যা ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার অংশ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তসলিমা নাসরিন। নিজের পঙ্গুত্বের জন্য দায়ী করছেন চিকিৎসকদের।

অসুস্থতার কথা এবং চিকিৎসার সকল আপডেট নিজেই দিয়েছেন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে। অপারেশন শেষে বাসায়ও ফিরেছেন তিনি। বাসায় ফিরেই এ বিষয়ে পরপর দুইটি স্ট্যাটাস দিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। ক্ষোভ ঝেড়েছেন ডাক্তারদের প্রতি।

স্ট্যাসটি অপরিবর্তীতভাবে তুলে ধরা হলো।

তসলিমা নাসরিন লিখেন, ‘টাকার লোভে কিছু অসৎ ডাক্তার আমি যে রোগের রোগী নই, সেই রোগের রোগী বানিয়ে আমার সর্বনাশ করেছে, আমার আয়ু অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে, জীবনকে দুর্বিষহ করেছে, জীবন যাপনের আনন্দ অনেকটাই নষ্ট করেছে, কিন্তু আমি তো আমিই থাকবো, সে যতদিনই বাঁচি। দীর্ঘজীবন না পাবো, না পেলাম।

কিন্তু অল্প ক’দিনই মাথা উঁচু করেই বাঁচবো। নিজের আদর্শ নিয়েই বাঁচবো। কোনও আদর্শ বিসর্জন দেবো না, মৃত্যু এলে আসুক।’ এর আগে আরও একটি স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে হাসপাতাল থেকে পঙ্গুত্ব কিনে বাড়ি ফিরলাম। শুক্রবার দুপুরে হোঁচট খেয়ে পড়ে হাঁটুতে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম শুক্রবার রাতেই।

এক্সরে করে দেখতে চেয়েছিলাম হাঁটুর লিগামেন্টে কিছু হলো কি না। হিপ জয়েন্টে কোনও ব্যথা ছিল না আমার। হিপ জয়েন্ট ডাক্তাররা পরীক্ষা করেও দেখেননি।

কিন্তু এক্সরে করে বলে দিলেন আমার হিপ ভেঙ্গেছে, হিপ রিপ্লেসমেন্ট করতে হবে। তারপর তো ডাক্তারদের ওপর শতভাগ বিশ্বাস, আমার অজস্র নির্বুদ্ধিতা, আমাকে ওদের ভিক্টিম করেছে।

প্রথম এক্সরে রিপোর্ট হাতে পেয়েছি, ওরা রিপোর্টটি সরিয়ে ফেলে নতুন করে লেখার আগে। প্রথম রিপোর্টে লেখা ছিল, ‘পুরোনো একখানা ফ্র্যাকচার দেখা যাচ্ছে’। হ্যাঁ পুরোনো একখানা ফ্র্যাকচার যেটা কোনও এক কালে ঘটে নিজে নিজেই হীল হয়ে গিয়েছিল।

এরকম থাকে শরীরে। হীল হয়ে যাওয়া পুরোনো ফ্র্যাকচারকে আড়াল করে আমাকে নতুন ফ্র্যাকচারের গল্প শুনিয়ে তারা শনিবার দুপুরেই তড়িঘড়ি আমার টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট করে দিল।

সবচেয়ে হাস্যকর জিনিস, ইমারজেন্সিতে গিয়ে আমি যা বলেছি, আমার হাঁটুর ব্যথার কথা, সেটি সম্পূর্ণ ডিলিট করে দিয়ে ডিসচার্জের সময় নতুন করে হিস্ট্রি লিখে দিয়েছে, যেখানে হাঁটু শব্দটিই নেই, আছে হিপ হিপ হিপ। আমি নাকি হিপ জয়েন্টের যন্ত্রণায় কাতরেছি, আমার হিপ জয়েন্ট নাকি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।

বাহ, কী সুন্দর হিস্ট্রি পাল্টে দেওয়া হলো। মূল হিস্ট্রি গায়েব। আমাকে এখন এই ভেবে সান্ত্বনা পেতে হবে, যেদিন হোঁচট খেয়েছিলাম, সেদিন হয়তো আমার মাথা মেঝেতে লেগে ফেটে যেতে পারতো, আমি মরে যেতে পারতাম।

আমার হিপ জয়েন্ট আর ফিমার গেছে চিরতরে, আমার জীবন আর আগের জীবন নেই, আমার চলাফেরা স্লথ হবে যদি কোনওদিন হাঁটতে পারি, স্থবির জীবনে অজস্র রোগশোক এসে বাসা বাঁধবে, কিন্তু আপাতত বেঁচে তো আছি। এইবা কম কিসে!’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন