২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

বিজয়ের মাসে কেন পাকিস্তান দূতাবাসে যাতায়াত, প্রশ্ন আ.লীগের

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:০৬ অপরাহ্ণ, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮

‘বিজয়ের এই মাসে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ জনমনে প্রশ্নের সঞ্চার করে’- এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।

রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটি রাষ্টের কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে দূতাবাসের সঙ্গে যাতায়াত থাকতে পারে। তবে বিজয়ের এই মাসে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ জনমনে প্রশ্নের সঞ্চার করে। একদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে গোপন বৈঠক, অন্যদিকে পাকিস্তানের দূতাবাসে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ ও গোপন বৈঠক ষড়যন্ত্রের আভাস দেয়।’

তিনি বলেন, ‘দুই বৈঠক একই সূত্রে গাথা। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি, এই সাক্ষাৎ আসন্ন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনীতিকে বিনষ্টের দুরভিসন্ধি।’

বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গতকাল ও আজ বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সারাদেশে তাদের নেতাকর্মীরা যে সন্ত্রাস ও অগ্নিকাণ্ড চালাচ্ছে, তারই অংশ হিসেবে আমরা দেখতে পাই বিএনপির গুলশান ও পল্টন কার্যালয়ে ভাঙচুর। এই হামলা আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশকেই শুধু বিঘ্নিত করে না, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সুষ্ঠু ধারাকেও ব্যাহত করে।’

‘এ ধরনের আচরণ সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আদর্শবিবর্জিত একটি দলের প্রধান যখন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয় এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্ণধার দুর্নীতির দায়ে যখন পালিয়ে বিদেশে অবস্থান করে, তখন বিএনপির নেতাকর্মীদের এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আস্ফালন শুধু রাজনৈতিক পরিবেশকে নয় সামাজিক পরিবেশকেও বিনষ্ট করে।’

‘বিএনপি একটি কর্পোরেট সংস্থা’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, বিএনপি নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে কী ধরনের বাণিজ্য করেছে। একটি রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়ে এমন বাণিজ্য হতে পারে না। এটা থেকে বোঝা যায়, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয় বরং একটি কর্পোরেট সংস্থা।’

‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি গাঁটছড়া সম্পর্ক’ দাবি করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ এবং এর মাধ্যমে দলের নেতৃত্বের ওপর আস্থাহীনতাই প্রকাশ পায়। এমন মনোনয়ন বাণিজ্যের নেতৃত্বে আছেন মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবির রিজভী। যার নেপথ্যের নায়ক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান। একটি নীতিভ্রষ্ট, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে দেশের জনগণ এর বেশি কিছু প্রত্যাশা করতে পারে না বলে মনে করি।’

‘আমরা বারবার বলে এসেছি, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট কোনো রাজনৈতিক জোট নয়, বরং এটা আদর্শিক। বিএনপির প্রধান শরিক ঐক্যফ্রন্ট নয়, জামায়াত। গতকাল মনোনয়ন ভাগাভাগির মধ্য দিয়েই আবারও সেটা প্রমাণিত। আপনারা ইতোমধ্যে জানতে পেয়েছেন যে, শরিক হিসেবে জামায়াত আসন পেয়েছে ২৩টি এবং ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে ১৭টি। যার মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি গাঁটছড়া সম্পর্ক, তারা অবিচ্ছেদ্য।’

আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টি কতগুলো আসন পাচ্ছে’- এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। বিষয়টি আমরা পরিষ্কার করতে পারব আজকে বিকাল নাগাদ। ব্যাপারটা জানার জন্য আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।’

কত আসনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে মীমাংসা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আনুমানিক কিছু সংবাদ মাধ্যমে বলা উচিত হবে না। আমরা আশা করি, সন্তোষজনক একটি মীমাংসা হবে।’

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী যারা ছিলেন, আমাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দুই থেকে তিনজন, বাকিরা মনোনয়ন প্রত্যাহারের অপেক্ষায় আছেন। আমরা আশা করছি বাকিগুলো আজ প্রত্যাহার হয়ে যাবে। আমাদের দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খোলা চিঠির আহ্বানে সবাই সাড়া দিয়েছেন। যে দু-একজন বাকি আছেন, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করছি, তারাও প্রত্যাহার করে নেবেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন