২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বিরল চর্মরোগের কারণে ডোরাকাটা শিশুর জন্ম

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:২৫ অপরাহ্ণ, ২৩ নভেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: জন্মগত চর্মরোগ নিয়ে চট্টগ্রামের নাজিরপোলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। সারা শরীর প্লাস্টিকের মতো চামড়া দিয়ে ঢাকা এবং ত্বকে বাদামি আবরণের ওপর লাল ডোরাকাটা দাগের এ ধরনের নবজাতকদের ‘কলোডিয়ান বেবি’ বলা হয়ে থাকে।

গত শনিবার রাতে (২১ নভেম্বর) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। দেওয়ানহাট এলাকার বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী এক গৃহবধূ নবজাতকটির মা। জন্মের পর পরই শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নবজাতকটি ৩৮ সপ্তাহে জন্ম নিয়েছে। এটি ওই গৃহবধূর প্রথম সন্তান।

চট্টগ্রামের মেমন হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ইশরাত জাহান বলেন, হারলেকুইন ইকথাইয়োসিস নামে একটি চর্মরোগে ভুগছে নবজাতকটি। শিশুটির পুরো শরীরে বাদামি আবরণের উপর লাল ডোরাকাটা রয়েছে।

তিনি বলেন, কয়েক লাখে একজন বাচ্চা এ ধরনের রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। বাবা বা মায়ের বংশগত দিক থেকে নবজাতকটি তা পেতে পারে।

চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের প্রধান অধ্যাপক জগদীশ দাশ জানান, নবজাতকটির শরীরে ত্রুটি মারাত্মক। একই ধরনের ত্রুটি নিয়ে এর আগেও এক নবজাতককে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এ ধরনের শিশুর চর্মরোগের সমস্যা ছাড়াও হাত-পায়ের পেশী দুর্বল হয়। তারা হাত-পা নাড়াতে পারে কম। ভর্তি হওয়া নবজাতকেরও একই সমস্যা আছে।

চমেক হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, এটি একটি কলোডিয়ান বেবি। হারলিকুইন ইকথাইয়োসিস নামে এক ধরনের জন্মগত চর্মরোগ আছে, যেগুলো জিনগত ত্রুটির কারণে হয়। সাধারণত কয়েক লাখ নবজাতকের মধ্যে একজন এ ধরনের রোগে আক্রান্ত অবস্থায় জন্ম নেয়। বাবা অথবা মায়ের বংশগত কোনো ত্রুটি থেকে নবজাতক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ধরনের রোগে শিশুর চেহারাটা অদ্ভূত হয়। চোখ এবং ঠোঁট রক্তবর্ণ হয়। ত্বকের সমস্যা থাকে। ত্বক খসে পড়ে না। চামড়াগুলো মোটা ও পুরু হয়, খসখসে থাকে। একটি শিশুকে পুরু প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে যে অবস্থা হয়, সাধারণ কলোডিয়ান বেবি সেরকম।

তিনি আরও জানান, কলোডিয়ান বেবিদের ত্বক ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ জটিলতা থাকে। পানিশূন্যতাও থাকে। মুখ খুলতে পারে না। এজন্য স্বাভাবিকভাবে তারা খাবারও গ্রহণ করতে পারে না। জন্মের পর মাত্র ১৫ শতাংশ কলোডিয়ান বেবি বেঁচে থাকে। যদি শরীরে জটিলতা মারাত্মক আকারের হয়, তাহলে এ ধরনের শিশু জন্মের প্রথম সপ্তাহেই মারা যায়।

অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী জানান, ভবিষ্যতে ওই দম্পতির সন্তান নেওয়ার আগে তাদের ‘জেনেটিক কাউন্সেলিং’ করা দরকার।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন