২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের আজ জন্মদিন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৪৫ অপরাহ্ণ, ১০ আগস্ট ২০২০

বার্তা পরিবেশক অনলাইন:: আজ ১০ আগস্ট বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৬তম জন্মদিন। ১৯২৪ সালের এই দিনে নড়াইলের মাছিমদিয়ায় মেছের আলী ও মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এসএম সুলতান। তার রং-তুলিতে ফুঁটে উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের কথা। দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে তার আঁকা অসংখ্য ছবি।

এ শিল্পীর মা-বাবা আদর করে ডাকতেন ‘লাল মিয়া’। শিশু বয়স থেকেই ছবি আঁকায় ঝোঁক ছিল এসএম সুলতানের। ১৯২৮ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন তিনি। স্কুলের অবসরে রাজমিস্ত্রি বাবাকে কাজে সহযোগিতা করতেন এবং মাঝে মাঝে ছবি আঁকতেন। ১৯৩৩ সালে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় জমিদার শ্যামাপ্রাসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি এঁকে তাক লাগিয়ে দেন শিশু সুলতান। সেই ছবি দেখে মুগ্ধ হন নড়াইলের তৎকালীন জমিদাররা।

১৯৩৮ সালে কলকাতায় যাওয়ার পর চিত্রসমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে পরিচয় হয় এসএম সুলতানের। ১৯৪১ সালে ভর্তি হন কলকাতা আর্ট স্কুলে। ১৯৪৩ সালে কলকাতা আর্ট স্কুল ত্যাগ করেন তিনি। কিছুদিন কাশ্মীরের পাহাড়ে উপজাতিদের সঙ্গে বসবাস করেন এবং তাদের জীবন-জীবিকার ছবি আঁকেন। ১৯৪৫ সালে ভারতের সিমলায় সুলতানের প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী হয়। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের লাহোরেও একটি প্রদর্শনী হয়।

১৯৫০ সালে চিত্রশিল্পীদের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে পাকিস্তান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকা যান সুলতান। এরপর ইউরোপে বেশ কয়েকটি একক ও যৌথ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সে সময় পাবলো পিকাসো, সালভেদর দালি, পল ক্লী’র মতো খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীদের ছবির পাশে এসএম সুলতানের ছবি স্থান পায়। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বাঁশি এবং সুরযন্ত্র বাজাতেও পটু ছিলেন এসএম সুলতান। তিনি হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি পছন্দ করতেন না।

১৯৫৩ সালে নড়াইলে ফিরে আসেন এসএম সুলতান। শিশু-কিশোরদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি চারুকলা শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। ১৯৬৯ সালের ১০ জুলাই ‘দি ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৭ সালে স্থাপিত হয় ‘শিশুস্বর্গ’। অবশ্য অনেক আগেই স্বপ্নের ‘শিশুস্বর্গ’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন সুলতান। এসএম সুলতান তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে ১৯৯২ সালে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের দ্বিতলা নৌকা (ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ) নির্মাণ করিয়েছিলেন।

চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে এসএম সুলতান ১৯৮২ সালে ‘একুশে পদক’, ১৯৮৪ সালে ‘রেসিডেন্ট আর্টিস্ট্ ১৯৮৬ সালে ‘বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা’, ১৯৯৩ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ পেয়েছেন। এছাড়া লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’, এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর অসুস্থ অবস্থায় যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান বিশ্বনন্দিত চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান। এরপর জন্মস্থান নড়াইলে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন