২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

‘বুলবুল’র শঙ্কা কাটিয়ে সৈকতে পর্যটকরা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৫৭ অপরাহ্ণ, ১২ নভেম্বর ২০১৯

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন::: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব মুক্ত হয়েছে দেশ। সোমবার সকালে তুলে নেয়া হয়েছে সব সতর্ক সংকেত। এরপর ঝলমলে রোদে আবারও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সৈকতের বালিয়াড়ি।

বৈরি আবহাওয়ায় পর্যটকরা তিনদিন হোটেলে বন্দি সময় পার করলেও সোমবার সকাল থেকে সৈকতে ভিড় জমাচ্ছেন তারা। কয়েকদিনের আতঙ্ক কাটিয়ে স্থানীয়রাও যোগ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে।

এদিকে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে গিয়ে আনন্দ যেন বিষাদে রূপ না নেয় সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দুর্ঘটনা রোধে তৎপর আছেন লাইফগার্ড কর্মীরা।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তিনদিন সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া পর্যটকরাও সোমবার তীরে ফিরেছেন। সংকেত নামিয়ে ফেলার পর পরই সকাল সাড়ে নয়টায় এলসিটি কুতুবদিয়া ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনিং সেন্টমার্টিন গিয়ে তাদের নিয়ে বিকেলেই টেকনাফে ফিরে আসে। পর্যটকদের নিরাপদে রেখে টেকনাফে পৌঁছে দিতে পেরে শুকরিয়া জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ।

পুরুষদের পাশাপাশি নরীরাও ভিড় করছেন সৈকতে

কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনিং এবং কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, কোনো যাত্রী ছাড়াই সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে জাহাজ দুটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপর গত বৃহস্পতিবার থেকে আটকে পড়া প্রায় ১২শ’ পর্যটককে নিয়ে বিকেলে সেগুলো আবার টেকনাফ ফিরে আসে।

কক্সবাজার সৈকতে বিপদাপন্ন পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করা ‘সী সেইফ লাইফগার্ডের’ সুপারভাইজার মো. ওসমান গনি জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবলের প্রভাবে শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টির পাশাপাশি সাগর খুবই উত্তাল ছিল। সে সময় বেড়াতে আসা সিংহভাগ পর্যটক হোটেল রুমে, লবিতে বসে অলস সময় পার করলেও কিছু তরুণ পর্যটক ভয় উপেক্ষা করে সাগরে নেমেছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমে সংকেত উঠে যাওয়ায় এখন সব বয়সের পর্যটকরা সৈকতে নামছেন। নিজের মতো গোসল, হৈ হল্লুড় করে আনন্দ করছেন।

তিনি আরও জানান, অনেক পর্যটক আনন্দে মেতে ঢেউয়ের খেই হারিয়ে ভেসে যান। এমন পরিস্থিতি এড়াতে লাইফগার্ডকর্মীরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। যারা একটু বিপৎসীমা অতিক্রম করছেন তাদের কাছে গিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হচ্ছে।

ঢাকার বনশ্রী থেকে স্ব-পরিবারে আসা আবীর ইসলাম বলেন, এসেছি শনিবার। তখন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রুমেই বন্দি থাকতে হয়েচিল। এখন আকাশ পরিষ্কার। তাই সবাই মিলে ঢেউয়ের ছোঁয়ায় আনন্দ করছি।

কলাতলীর হোটেল হোয়াইট অর্কিডের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) রিয়াদ ইফতেখার বলেন, অক্টোবরের শুরু থেকে পর্যটন মৌসুম চলছে। ছুটিরদিন ছাড়াও পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে কমবেশি। সব হোটেলেই কোলাহল রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) থেকে শনিবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত পর্যন্ত ভোগান্তিতে ছিলেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। কিন্তু এখন পরিষ্কার আকাশে পর্যটক ও স্থানীয় ভ্রমণ পিপাসুরা সাগরের সান্নিধ্য নিচ্ছেন।পর্যটকদের ভেসে যাওয়া রোধে তৎপর লাইফগার্ড কর্মীরা

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, যে কোনো ধরনের দুর্যোগ এড়াতে প্রস্তুতি ছিল আমাদের। বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি থেকে আল্লাহ কক্সবাজারবাসীকে রক্ষা করেছেন। এখন সতর্কতা সংকেতও নেই। তাই স্থানীয়দের মতো পর্যটকরাও নির্বিঘ্নে আনন্দ উপভোগ করছেন।

তিনি বলেন, পর্যটকদের যে কোনো ধরনের হয়রানি এড়াতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টহলে আছেন। প্রতিটি হোটেলে ম্যাজিস্ট্রেটের নম্বর দেয়া আছে। কোনো ধরনের হয়রানি হলে ফোনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, জেলার আইন-শৃঙ্খলা নির্বিঘ্ন রাখতে বিশেষ নজর রেখে মাঠে রয়েছে পুলিশ। পর্যটন এলাকায় ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি আমাদেরও দৃষ্টি রয়েছে।

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন